আয়কর রিটার্নে সবার সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। শুধু নির্দিষ্ট কয়েক শ্রেণির করদাতাকে এ বিবরণী জমা দিতে হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ছয় ধরনের করদাতার জন্য এ নিয়ম করেছে। এর জন্য নির্ধারিত ফরম হলো আইটি-১০বি (২০০৩), যেখানে করদাতার পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করতে হয়।
যাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক :
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী
সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতিবছর রিটার্নের সঙ্গে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হয়। তাঁদের সম্পদ বৃদ্ধির বা হ্রাসের হিসাব জানার পাশাপাশি অবৈধ সম্পদ যাচাইয়েও এ নিয়ম কার্যকর।
৫০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ থাকলে
করদাতার স্থাবর সম্পদ (বাড়ি, প্লট, অ্যাপার্টমেন্ট ইত্যাদি) ৫০ লাখ টাকার বেশি হলে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হবে। এখানে সম্পদের মূল্য ধরা হবে ক্রয়ের সময়কার বাজারমূল্যে।
সিটি এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট থাকলে
করদাতার যদি সিটি করপোরেশন এলাকায় (যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম) বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট থাকে, তবে সম্পদ ৫০ লাখ টাকার কম হলেও বিবরণী জমা দিতে হবে।
মোটরযান থাকলে
একজন করদাতার যদি গাড়ি থাকে, তবে অন্য সম্পদ ৫০ লাখ টাকার নিচে হলেও সম্পদ বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক।
বিদেশে সম্পদ থাকলে
কোনো করদাতার দেশের বাইরে সম্পদ থাকলে তা অবশ্যই রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে। দেশে ৫০ লাখ টাকার কম সম্পদ থাকলেও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নেই।
কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক
কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হলে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে। সম্পদ ৫০ লাখ টাকার কম হলেও নিয়ম প্রযোজ্য।
সম্পদ বিবরণীতে যা জানাতে হয় : করদাতাকে বাংলাদেশে অবস্থিত সব ধরনের সম্পদ যেমন-ব্যবসার মূলধন, শেয়ার ও অংশীদারি বিনিয়োগ, কৃষি ও অকৃষি জমি-ঘর, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার-বন্ড, ঋণ, প্রভিডেন্ট ফান্ড, মোটরযান, অলংকার, আসবাবপত্র, নগদ অর্থ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হয়। পাশাপাশি বিদেশে অবস্থিত সম্পদ থাকলেও তা লিখতে হবে। সব সম্পদের যোগফল টাকার অঙ্কে উল্লেখ করে শেষে করদাতার নাম, স্বাক্ষর ও তারিখসহ ঘোষণা দিতে হয়।