গত ২০ মাসের বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যের পাঁচটি দেশে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট’ (এসিএলইডি)-এর সর্বশেষ তথ্য বলছে, এই সময়ে ইসরায়েল প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি হামলা চালিয়েছে। সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে। ইসরায়েলের বর্বর হামলার শিকার হওয়া বাকি চারটি দেশ হলো—ইরান, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেন।
এসিএলইডির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকেই আগ্রাসনের মাত্রা তীব্র হয়ে ওঠে। চলমান গাজা সংকট ছাড়াও ইসরায়েল লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং সর্বশেষ ইরানে হামলা চালিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির নথি অনুযায়ী, এই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনে অন্তত ১৮ হাজার ২৩৫টি হামলা চালিয়েছে। লেবাননে হামলার সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার ৫২০। এছাড়া সিরিয়ায় ৬১৬টি, ইরানে ৫৮টি এবং ইয়েমেনে ৩৯টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এসব হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবর্ষণ এবং দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা। অনেক ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে স্থাপনা ধ্বংসের ঘটনাও ঘটেছে।
গাজা উপত্যকায় টানা ৬২৮ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, একই সময়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনি।
এদিকে গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাত আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লেবানন সীমান্তে প্রায় ১৪ মাসের সংঘাত শেষে ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় দুই পক্ষ। এই সংঘাতে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
সিরিয়ার পরিস্থিতিও ভয়াবহ। ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর, বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের দুই দিন পর, দেশজুড়ে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিমানবন্দর, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ নানা কৌশলগত স্থাপনায় একের পর এক আঘাত হানে। গত ছয় মাসে সিরিয়ায় ২০০-র বেশি হামলা হয়েছে বলে জানায় এসিএলইডি।
ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতেও ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়, বিশেষ করে ২০২৪ সালের শেষদিকে হামলার মাত্রা বেড়ে যায় এবং ২০২৫ সালেও তা অব্যাহত থাকে।
সবশেষ হামলার শিকার হয় ইরান। চলতি বছরের ১৩ জুন থেকে টানা ১২ দিন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলে। শেষ পর্যন্ত ২৩ জুন দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। সূত্র: আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজিম