লিবিয়ার যুবক আমের আল মাহদি মানসুর আল গাদ্দাফি এ বছর হজ পালনের জন্য মনস্থির করেছিলেন। কিন্তু বাঁধ সাধলো নিয়ম। আমেরকে ইমিগ্রেশনে আটকে দেওয়া হলো। তার পদবি আল গাদ্দাফি। এই অংশই তাকে বিপদে ফেলে।
লিবিয়ার সাবেক বিতর্কিত শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির সাথে নাম মিলে যাওয়াতেই এই জটিলতা। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধের কারণে কিছু সিস্টেমে এখনও নিষিদ্ধের তালিকায় ছিল গাদ্দাফি শব্দটি। আর তাতেই ঘটলো বিপত্তি।
আমেরের দল যখন বিমানে উঠছিল, তখনও তিনি কাউন্টারে আটকে। তার কাকুতি-মিনতি সত্ত্বেও ফ্লাইট ক্যাপ্টেন তাকে ছাড়াই যাত্রা করার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নিরাপত্তার অনিশ্চয়তা এবং সময়সূচির সীমাবদ্ধতা।
কিন্তু আমের ছিলেন অনড়। তিনি পবিত্র মক্কা যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন। গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তার এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই, বিমানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিল এবং বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হলো। কিছু বিলম্ব এবং ছোটখাটো মেরামতের পর বিমানটি আবারও উড্ডয়ন করলো। কিন্তু দ্বিতীয়বারও একই ঘটনা ঘটে। বিমান ফিরে আসে।
যাত্রী ও ক্রুদের মতে, দ্বিতীয় জরুরি অবতরণের পরেই ক্যাপ্টেন ঘোষণা করলেন, আমি শপথ করছি, আমের আমাদের সাথে এই বিমানে না থাকলে আমি আর ফ্লাইট চালু করবো না। কর্তৃপক্ষ দ্রুত আমেরকে তার ভ্রমণের অনুমতি দিলেন। তৃতীয় প্রচেষ্টায়, আমেরকে নিয়েই বিমানটি কোনো রকম দুর্ঘটনা বা ঝামেলা ছাড়াই ছাড়াই যাত্রা করলো এবং ভালোভাবে সৌদি আরবে পৌঁছায়।
এই অবিশ্বাস্য গল্প দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল। অনেকেই এটিকে ঐশ্বরিক ইচ্ছা এবং প্রার্থনার ফল হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন। আমের পরবর্তীতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি শুধু হজ করতে চেয়েছিলাম। আর আমি বিশ্বাস করতাম, যদি এটা আমার ভাগ্যে লেখা থাকে, তবে কোনো শক্তিই তা আটকাতে পারবে না।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল