বক্স অফিসে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর এবার বড় বাজি খেলতে চলেছেন বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমার। এবারের টার্গেট ‘হাউসফুল ৫’। বিশাল বাজেট, তারকাবহুল কাস্ট আর গ্রীষ্মকালীন ছুটির বাজার—সব মিলিয়ে এই ছবি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—প্রেক্ষাগৃহে কি সত্যিই হাউসফুল হবে ‘হাউসফুল ৫’?
পনেরো বছর, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং অক্ষয় কুমার—এই তিনে মিলে বলিউডের অন্যতম সফল কমেডি সিরিজ ‘হাউসফুল’। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি জনপ্রিয় মিমে বলা হয়, “খানদের মৌসুম থাকে, অক্ষয় কুমার সব মৌসুমেই চলেন।” বর্তমানে, যেখানে একদিকে সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং অন্যদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো দখল করে নিচ্ছে বাজার, সেখানে কোনো ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়ার আগে প্রযোজকরা শতবার চিন্তা করেন। তবে এই ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন ছুটির মৌসুমে।
‘হাউসফুল ৫’-এর ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে ২৭ মে। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে আসবে ৬ জুন, আর বাজেট প্রায় ৩৭৫ কোটি টাকা।
এই ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, প্রতিটি কিস্তির বাজেট যেমন বেড়েছে, আয়ও ততই বেড়েছে—
- হাউসফুল (২০১০): বাজেট ৩০ কোটি, আয় ১২৪.৫০ কোটি টাকা
- হাউসফুল ২ (২০১২): বাজেট ৬০–৬৪ কোটি, আয় ১৮৬ কোটি টাকা
- হাউসফুল ৩ (২০১৬): বাজেট ১০০ কোটি, আয় ১৯৫ কোটি টাকা
- হাউসফুল ৪ (২০১৯): বাজেট ১৫০ কোটি, আয় ২৮০ কোটি টাকা
বাণিজ্য বিশ্লেষকের মূল্যায়ন
বিশিষ্ট ট্রেড বিশ্লেষক কমল নাহতা এনডিটিভি কে বলেন, “ট্রেইলারটি ছিল অসাধারণ। একটি কমেডি ছবির মূল উদ্দেশ্য মানুষকে হাসানো—এটি সেটি সফলভাবে করেছে।” তিনি আরও বলেন, “এই বিশাল তারকাবহর নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক। প্রতিটি চরিত্রের যথেষ্ট স্ক্রিন টাইম রয়েছে—এটাই দর্শক চায়।”
মিটু বিতর্ক ঘিরেও আলোচনায় ফ্র্যাঞ্চাইজি
২০১৯ সালে ‘হাউসফুল ৪’ মুক্তির আগেই পরিচালক সাজিদ খান ও অভিনেতা নানা পাটেকর-এর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এরপর সাজিদ খানকে পরিচালকের আসন থেকে সরিয়ে ফারহাদ সামজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে এবার চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হলো, ‘হাউসফুল ৫’-এ আবারও ফিরেছেন নানা পাটেকর। বলিউডে বিতর্ক যেন খুব দ্রুতই ধূলিসাৎ হয়ে যায়!
‘হাউসফুল ৫’ হবে অক্ষয়ের চলতি বছরের তৃতীয় ছবি। এর আগে মুক্তি পেয়েছে ‘কেসরি চ্যাপ্টার ২’ এবং ‘স্কাই ফোর্স’। ‘কেসরি চ্যাপ্টার ২’ ছবিটি জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ভিত্তিক। এতে বাস্তব চরিত্র সি শংকরন নায়ার-এর ভূমিকায় অভিনয় করেন অক্ষয়। বাজেট ছিল ১৫০ কোটি টাকা, আয় ১৪২ কোটি টাকা।
তবে ‘স্কাই ফোর্স’, যা ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধভিত্তিক, কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে অক্ষয়কে। বাজেট ১২০ কোটি, আয় ১৪৪–১৬৮ কোটি টাকা। তবুও প্রশ্ন থেকে যায়—শেষ কয়েকটি ছবি বক্স অফিসে হতাশ করলেও, প্রযোজকরা কেন এখনো অক্ষয়ের ওপর আস্থা রাখেন?
২০১৪ সালে ‘খেল খেল মে’ ছবির এক অনুষ্ঠানে অক্ষয় বলেছিলেন, "আমি মরিনি, কোথাও যাইনি, আমি কাজ করে যাব আজীবন।" তার ভক্তরা এখনো সেই বিশ্বাস ধরে রেখেছেন, এবং ‘হাউসফুল ৫’-এর নির্মাতারাও সেই পথেই হাঁটছেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক