শ্রমিকরাই দেশের আসল সম্পদ। শ্রমিকরাই পরিবর্তন করেন একটি দেশ। শ্রমিকেরা শরীরের রক্তমাখা ঘাম ঝরিয়ে মালিকের মুখে হাসি ফোটান। একজন শ্রমিকের সারা জীবন কেটে যায় মালিকের প্রতিষ্ঠানে। মালিকের মুখে হাসি ফোটাতে, মালিককে লাভবান করতে অসহনীয় পরিবেশে অতিরিক্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করেন হাসিমুখে। আজ যাদের শিল্পপতির তালিকায় নাম রয়েছে তাদের অর্থে রয়েছে শ্রমিকের রক্তভেজা ঘাম। দামি বাড়িতে বসবাস ও দামি গাড়িতে চলাফেরা একমাত্র শ্রমিকদের কারণেই। একজন শ্রমিক কখনোই মালিকের ক্ষতি হোক এমনটা আশা করেন না। শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও উপকার করার চেষ্টা করেন। রসুল (সা.) বলেছেন, ঘাম শুকানোর আগেই শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। ইবনে মাজাহ।
মনে রাখা জরুরি, শ্রমিকরাই মালিকপক্ষের শক্ত হাতিয়ার। শ্রমিক আছে বিধায় মালিক শিল্পপতি। ড্রেনের ময়লা পরিষ্কারের কারণে দামি টাইলসে গোসল সম্ভব। বাড়ির পাশের ময়লা পরিষ্কার করছে বিধায় চারপাশে দুর্গন্তমুক্ত, বাড়ির কাজের আপা ঘর গোছাচ্ছেন তাই ঘর পরিষ্কার। এজন্য শ্রমিক ও মালিকের কোনো পার্থক্য রাখতে নেই। তারা আমাদের কাছের লোক। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা জরুরি। অফিসের উচ্চপদস্থ বলে নিম্নপদস্থ শ্রমিকদের সঙ্গে ভাষা খারাপ করা উচিত নয়। রিকশা, বাসচালক ও হোটেলের কর্মচারীসহ সব ধরনের শ্রমিকদের সঙ্গে সুব্যবহার করতে হবে। শ্রমিকরাও মানুষ, তাদের সম্মান রয়েছে। তাদের সন্তান পরিবার-পরিজন আত্মীয়স্বজন আছে। শ্রমিকদের সঙ্গে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে তারা কষ্ট পান। মালিক শ্রমিক ভাই ভাই। রসুল (সা.) বলেন, তোমাদের অধীন ব্যক্তিরা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং, যার ভাইকে তার অধীন করেছেন, সে যেন তাকে তা-ই খাওয়ায়, যা সে খায়। সেই কাপড় পরিধান করায়, যা সে পরিধান করে এবং তাকে সামর্থ্যরে অধিক কোনো কাজের দায়িত্ব দেবে না, যদি এমনটা করতে হয়, তাহলে সে যেন তাকে সাহায্য করে। সহিহ বুখারি।
শ্রমহীন ব্যক্তির কোনো মূল্য নেই। শ্রমিকদের দায়িত্বশীল হয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান মনে করে আল্লাহর ভয় অন্তরে রেখে কাজ করতে হবে। ক্ষতি হলে মালিকের হবে এ ধরনের অসুস্থ মনমানসিকতা পরিহার করে অলসতা দূর করতে হবে। অলসতাকে কেউ পছন্দ করে না। অলসরা সফল হয় না আর পরিশ্রম বৃথা যায় না। প্রবাদ আছে, ‘পরিশ্রমই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।’
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক