আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় সারা দেশে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজধানীর অবস্থাও এর বাইরে নয়। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারের গরজ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা অনুদারতার শামিল। কিন্তু সাধ ও সাধ্যে পার্থক্য থাকায় বিব্রত অবস্থার শিকার হচ্ছে তারা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠেছে। খুন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং দখলবাজির মতো একের পর এক অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রকরা। তারা অপরাধ সাম্রাজ্য ধরে রাখতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ঘটাচ্ছে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা। সম্প্রতি গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে টেলি সুমনকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা আন্ডারওয়ার্ল্ডের অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কোনো ঘটনায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের একটি গ্রুপ আপাতত এগিয়ে থাকলে শিগগিরই প্রতিপক্ষ গ্রুপ প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। গণ অভ্যুত্থানের পর পুলিশ এখনো দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের অভ্যন্তরীণ বিরোধের সুযোগ নিতে পারে দেশিবিদেশি মহল। এতে বেড়ে যেতে পারে সামাজিক অস্থিরতা। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরাধ ঠেকাতে সাঁড়াশি অভিযানের বিকল্প নেই। তবে রাজনৈতিক পরিচয় দেখে অপরাধীকে বিবেচনা করলে তাতে কোনো লাভ হবে না। শীর্ষ অপরাধী থেকে শুরু করে যারা নানা ধরনের অপরাধ করছে তাদের চলমান সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের আওতায় আনা প্রয়োজন। অভিযোগ রয়েছে দলগুলো সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছে। যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পেশাদার সন্ত্রাসীদের সম্পর্ক ছিল না, তারাও দল ভারী করার জন্য তাদের সঙ্গে নিচ্ছে। ফলে আইনশৃঙ্খলাই শুধু নয়, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কি না, তা বড়মাপে প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার ওপর যেকোনো সরকারের গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে ব্যত্যয় থাকায় দেশের সিংহভাগ মানুষের আশীর্বাদধন্য বর্তমান সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় সন্ত্রাসী যে-ই হোক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সন্ত্রাসের বরপুত্রদের কঠোরভাবে দমনের কোনো বিকল্প নেই।