ব্যবসায়ীদের কান্না না শুনলে ঈদের পর ফ্যাক্টরিও কোরবানি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।
রবিবার ঢাকার গুলশান ক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিটিএমএ পরিচালক বলেন, ‘গ্যাস নাই, বিদ্যুৎ নাই, টাকা নাই আর আমাকে সঠিক সময় বেতন দিতে হবে। আমাকে সঠিক ইন্টারেস্ট রেট দিতে হবে। এই দেশে বৈষম্যবিরোধী একটা সংস্কার হচ্ছে। একটা বিপ্লব হচ্ছে। সেই বিপ্লবের একটা বড় স্টেকহোল্ডার আমরা। আমরা এই দেশে কোটি কোটি মানুষকে এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছি, এটাকে আপনারা কগনিজেন্সে নেন প্লিজ। যারা বাংলাদেশকে নিয়ে এত বড় বড় কথা বলতো, তারা তো পালিয়ে গেছে। কেউ হয়তো লন্ডনে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কেউ থাইল্যান্ডে, কেউ টার্কিতে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে এই অভিমানী মানুষগুলোর কথা যদি আপনারা আমলে না নেন, তাহলে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি যে এই দেশ আর কোনোভাবেই দেশ থাকবে না। সুতরাং আমরা বলব, ইন্ডাস্ট্রিজদের সঙ্গে একটা ইনক্লুসিভ আন্ডারস্ট্যান্ডিং এ আসতে হবে।’
পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যেখানে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে, সেসব দেশের উদাহরণ টেনে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘অন্যান্য দেশে ১০০ কোটি টাকা যদি বিনিয়োগ করে তাহলে সরকার সেই ব্যবসায়ীকে ৪০ কোটি টাকা প্রণোদনা হিসেবে দিয়ে দেয়। সেই টাকা সরকারকে আর কোনোদিন ফেরত দিতে হবে না। চিন্তা করা যায়। আর আমরা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ১৮ শতাংশ ইন্টারেস্টে পে করছি। সরকারি গ্যাসের কানেকশনের জন্য আমাকে ডিপোজিট জমা দিতে হয়। যেমন ধরেন, আমার একটা ছোট্ট ফ্যাক্টরিতে গ্যাসের বিল হয় হচ্ছে ২ কোটি টাকা। সেখানে আমাকে ডিপোজিট দিতে হয়েছে ১০ কোটি টাকা। আর অন্যান্য দেশে গভমেন্ট আপনার দৌরগোড়ায় এনার্জি নিয়ে দিচ্ছে।’
বিটিএমএ পরিচালক বলেন, ‘এনার্জি বলতে দুইটা ধরন হয় আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে। একটা হচ্ছে ইলেকট্রিসিটি মানে স্টেবল ইলেকট্রিসিটির লাইন। সেটি আপনার দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে এবং যেটা বাসাবাড়ির জন্য ১০ টাকা সেটা আপনার ইন্ডাস্ট্রির জন্য তারা কিন্তু সাবসিডাইজ রেটে দিচ্ছে ৭ টাকা অথবা ৮ টাকা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো কোনো দেশে সেটা আরো অনেক কম। কিন্তু আমরা ইন্ডাস্ট্রি চালাতে গিয়ে আমাদের বয়লার স্থাপন করতে হয়। সেখানে কোটি টাকা আমাদের বিনিয়োগ করতে হয়।’
‘অথচ আজকের বাস্তবতায়, আমাদের এক বন্ধু বলে গিয়েছেন— যে আমাদের জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে এই দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার স্বার্থে আমরা আজকে আপনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদেরকে আপনারা কগনিজেন্সি নিচ্ছেন না। প্লিজ দিস ইজ ভেরি হাই টাইম। ইতিমধ্যেই জিতু ভাই বলেছেন যে আজকে যদি আপনারা আমাদের এই ক্রন্দন না শুনেন আমরা হয়তো ঈদের পরে কোরবানি করার পরে আমাদের মনে হয় ফ্যাক্টরিটাও কোরবানি দিয়ে দিতে হবে। সেই কোরবানি আমরা দিতে চাই না। আমরা চাই সকলে মিলে আবার এই দেশটাকে গড়ে তুলব। আবার এই দেশটাকে উন্নয়নের শিখরে আমরা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন