রংপুরে ৬ মাস বয়সী কন্যা শিশুর গলা কেটে হত্যা করেছে মা। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পশ্চিম পলাশবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযুক্ত মা তুলসী রানীকে (২৩) গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে। তুলশী রানী ওই এলাকার বাবু লালের (৩৫) স্ত্রী।
শিশুটিকে হত্যার পর তুলসী রানী নিজেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আজকে কিছু হয়নি। বাচ্চাটা তো আমি নিজে মারলাম। বাচ্চাটা হওয়ার পর থেকে আমি ভালো করে রান্না করে খেতে পারি না। আরও একটা মেয়ে আছে তার সেবা যত্ন করতে পারি না, এটাই সমস্যা। তাই মেরে ফেলেছি।’ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ও নিহত শিশুর স্বজনরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবু লাল ও তুলসী রানীর ৮ বছরের সংসারে দুই কন্যার জন্ম হয়। এর মধ্যে বড় মেয়ে ৫ বছর বয়সী ও ছোট মেয়ে ৬ মাস বয়সী।বিয়ের পর থেকে তুলসী রানী মানসিক রোগে ভুগছিলেন। সোমবার সকাল ৬টায় তাকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সকালে দুধ খাওয়ানোর পর ঘুমিয়ে পড়া ৬ মাস বয়সী ওই শিশুকে রান্নাঘরের ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মা তুলসী। এরপর শিশুটির লাশ পরিবারের সবার সামনে উঠানে ফেলে দেয়। এ সময় পরিবারের লোকজনের চিৎকারে আশপাশের সবাই ছুটে আসে। জরুরি সেবা নম্বরে ফোনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে মা তুলসীকে গ্রেপ্তারসহ শিশুটির লাশ ও হত্যাকা ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে।
শিশুটির দাদী পাতানী বালা বলেন, তুলসী কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। সকালে সে দুধ খাওয়াতে ঘরে ঢুকে আমার ৬ মাস বয়সী নাতনীকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে উঠানে ফেলে দেয়। সে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটাবে তা কেউ কল্পনাও করিনি।
তারাগঞ্জ থানার অফিসার ওসি এমএ ফারুক বলেন, ৯৯৯ খবর পেয়ে জানতে পারি উপজেলা কুর্শা ইউনিয়নের পশ্চিম পলাশবাড়ী গ্রামে মা তার শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছে। শিশুটির বয়স ছয় মাস। তাৎক্ষণিক আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে হত্যাকারীকে (শিশুটির মা) গ্রেপ্তার করি। হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা বাবু লাল একটি হত্যা মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার মাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ