বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন কমানো এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রতিবাদে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জেলাজুড়ে হরতাল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকে পালিত এ কর্মসূচিতে সকাল থেকে জেলার সব উপজেলা ও পৌর শহরে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, ব্যাংক-বীমা ও সরকারি অফিস কার্যত বন্ধ থাকে।
হরতালে মোংলা বন্দরসহ জেলার সড়কপথে মালামাল আনা-নেয়া বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহীসহ ৪৮টি দূরপাল্লা ও আন্তজেলা রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদী ও মোংলা নদীতে ফেরি চলাচলও বন্ধ থাকে। ফলে বাগেরহাট কার্যত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ক্ষুব্ধ জনতা সকালে জেলা ও উপজেলার নির্বাচন অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কোনো কর্মকর্তা অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি। এছাড়া দড়াটানা সেতু টোল প্লাজা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জজ আদালত, খান জাহান আলী (রহ.) মাজার মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পিকেটিং হয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে টায়ার জ্বালানো ও গাছ ফেলার কারণে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
পিকেটিংয়ে তৎপর ছিলেন সাবেক এমপি শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, ব্যারিস্টার শেখ জাকির হোসেন, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ ইউনুসসহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, জনগণের দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন অন্যায়ভাবে বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়েছে। ইসি গেজেট পরিবর্তন না করা পর্যন্ত মোংলা বন্দর অচল করে আরও কঠোর আন্দোলন চালানো হবে।
জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ইসি বাগেরহাটের মানুষকে অবমূল্যায়ন করেছে। একটি আসন কমিয়ে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি খসড়ায় বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি রাখার প্রস্তাব করে। স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো শুনানিতে আপত্তি জানালেও ৪ সেপ্টেম্বর ইসি চূড়ান্ত গেজেটে একটি আসন কমিয়ে নতুনভাবে সীমানা নির্ধারণ করে। এতে আবারো ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে জেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে।
একই দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ মিছিল এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার (১০-১১ সেপ্টেম্বর) একটানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল