ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ভূমি প্রশাসন বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। এর কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে মূলত উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সাধারণ মানুষের ভূমি সংক্রান্ত প্রায় সব সেবা এই অফিসের মাধ্যমেই দেয়া হয়। তাই উপজেলা ভূমি অফিস হলো নাগরিক সেবার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু এই সেবার মান ও সুশাসন নিশ্চিত করতে এখনও নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।
তিনি বলেন, ভূমি সেবায় জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চতকরাসহ সেবার গুনগত মান পর্যবেক্ষণ ও উন্নতির জন্য স্টেকহোল্ডারগণ সরকারের সহযোগী হিসেবে সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে কাজ করলে জনগণের কল্যাণ হবে নিজস্ব বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিকতা দ্বারা তা নিরূপন করে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে জনগণের ট্যাক্স এর টাকায় আমাদের বেতন হয়। সেবাগ্রহিতাদের সাথে মানবিক আচরণ করতে হবে এবং কেউ যদি সেবাগ্রহিতাদের সাথে দুর্ব্যবহারে জড়িত থাক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দ্রুত সেবার ক্ষেত্রে সবার আগে জনগণ।
সোমবার রাজধানীর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অডিটরিয়ামে’ উপজেলা ভূমি অফিসের সেবা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, সুশাসন একটি রাষ্ট্রের অগ্রগতির পূর্বশর্ত। এটি এমন একটি কাঠামো,যেখানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার, ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়; ভূমিসেবার ক্ষেত্রেও তাই। ভূমি মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে গভীর সম্পর্ক; ভূমি খাদ্য, শিল্প এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল উৎস এবং দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভূমি সেবার মানোন্নয়ন কেবল প্রযুক্তিনির্ভর নয় এটি মানবিকতা, সততা ও দায়িত্ববোধের সমন্বয়। ডিজিটাল ভূমি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় কার্যকরিভাবে পৌঁছে দিতে হলে প্রযুক্তির পাশাপাশি সেবাদাতার মানসিকতা ও দক্ষতার উন্নয়ন অপরিহার্য। নাগরিক ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায়ই সম্ভব হবে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও আধুনিক ভূমি সেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
উপদেষ্টা বলেন, মাঠপর্যায়ে কর্মরত ভূমি কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বচ্ছতা, দেশ প্রেমও সততা এবং পেশাদারিত্বেরে মাধ্যমে ভূমি খাতে জনবান্ধব করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ভূমিসেবা প্রদানের সাথে নিযুক্ত সহকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মনিটরিং করতে হবে, অসততার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো কাজের জন্য উপরস্থ থেকে সুপারিশ আসলে দ্রুত হয়ে যায় তবে সাধারণ মানুষ কোনো সেই দ্রুত সেবা পাবে না, এসব অসংগতি পরিহার করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করেন টিআইবির পরিচালক-সিভিক এনগেজমেন্ট ফারহানা ফেরদৌস, প্রফেসর ড. সুরাইয়া খায়ের, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা, টিআইবি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী।
বিডি প্রতিদিন/আশিক