স্বাধীনতার পূর্বে স্থাপিত দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ঘন্টাঘর বাজারে পোস্ট অফিসটির বেহাল দশা হওয়ায় বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় পোস্ট অফিসের মাটির ঘরটি ধ্বসে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
চিঠিপত্র আদান-প্রদানে একসময় চিরিরবন্দরের সাতনালা, নশরতপুর ইউনিয়নের বৃহদাংশ ও সাঁইতাড়া ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের একমাত্র ভরসা ছিল এই পোস্ট অফিস। বর্তমানে মাটির ঘরটির অবস্থা একেবারে জরাজীর্ণ ও করুণ অবস্থা। ভেঙ্গে পড়েছে দেয়াল। দরজা ঘুনে নষ্ট হয়ে গেছে। জানালা চুরি হয়ে গেছে। বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে পোস্ট অফিসের ঘরটি। অফিসের আসবাবপত্র পোস্ট মাস্টার বাড়িতে নিয়ে গেছেন। পোস্ট মাস্টারের অবহেলা অযত্নে অফিসটিতে বসার কোন অনুকূল কোনো পরিবেশ নেই।
স্থানীয় আনিসুল হক শাহ জানান, আমরা জন্মলগ্ন থেকে এই পোস্ট অফিসটি দেখে আসছি। কিন্তু কখনও কাউকে পোস্ট অফিসটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে দেখিনি। বড় কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ভূমিকম্প হলে মাটির তৈরি অফিস ঘরটি ধ্বসে যেতে পারে। ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো ঘটনাও।
স্থানীয় ও বিন্যাকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. মসলেম উদ্দিন বলেন, একসময় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠিপত্র আদান প্রদান হত। এখনও মাঝে মাঝে বেশ কিছু চিঠিপত্র আসে। ঘরটির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।
স্থানীয় আরেক প্রবীণ ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এলাকার কেউ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে টাকা পাঠালে ওই পোস্ট মাস্টার গ্রাহককে না জানিয়ে কিছুদিন তা গোপন করে রাখতেন। পরবর্তীতে জানাজানি হলে টাকাগুলো কয়েক দফায় প্রদান করতেন। এখনও তার ওই স্বভাব রয়েছে বলে অভিযোগ।
ওই শাখা অফিসের পোস্ট মাস্টার শাহজাহান আলী বলেন, বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে লিখিত আবেদন দেয়া হয়েছে। নিজস্ব কোন জমি না থাকায় সরকারিভাবে ভবন করা হয়নি। আর এখন সরকারি কয়েকটি চিঠিপত্র ছাড়া অন্য চিঠিপত্র তেমন না আসায় ভবন নির্মাণের তেমন গুরুত্ব নাই। গ্রাহকের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বর্তমানে কেউ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে টাকা পাঠায় না।
বিডি প্রতিদিন/এএ