ভেঙ্গে পড়েছে গাইবান্ধা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি, ছিনতাইসহ হত্যার মতো ঘটনা। শুধু রাতে নয়, দিনে দুপুরেও হচ্ছে চুরি ও ছিনতাই। নিয়মিত চুরি, ছিনতাই ও হত্যা সংঘটিত হলেও আপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়দের। প্রশাসনের নিয়মিত তদারকির অভাব ও মাদকের সহজলভ্যতায় এসব অপরাধ কার্মকান্ড বেড়েছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে উদ্বেগ। প্রতিদিনই ঘটছে খুন, লাশ উদ্ধার, মারামারি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। সামাজিক দ্বন্ধ¦ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঘটছে পাল্টাপাল্টি হামলা ও হত্যার ঘটনা। সাথে কিছুতেই কমছে না জেলা জুড়ে মাদকের আগ্রাসনসহ নানা অপরাধ।
পুলিশের তথ্য মতে, গেল জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের ১৫ জুন পর্যন্ত জেলার ৭ উপজেলায় দুটি ছিনতাই জনিত হত্যাসহ শুধু হত্যার ঘটনাই ঘটেছে ২৭টি। এছাড়া ৮টি ছিনতাই ও ২ টি ডাকাতি, ৩৮টি চুরি ও ৪১টি ধর্ষণসহ ৯৫টি নারী নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের যথাযোগ্য ভূমিকার অভাবে সর্বত্রই বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধ। এতে জানমালের নিরাপত্তাসহ স্বাভাবিক চলাফেড়া নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। জেলা জুড়ে মাদকের বিস্তার বাড়ায় এসব অপরাধের ঘটনা বাড়ছে। সেই সাথে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার ও চোর, ছিনতাইকারীসহ অপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়ায় অনেকে থানায় অভিযোগ করতেই যাননা বলে জানান তারা।
গাইবান্ধা শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শহর জুড়ে এমন অপরাধ কর্মকান্ড আর কখনো ঘটেছে বলে আমার জানা নাই। সাধারন মানুষ সন্ধ্যার পর বের হতে হয় জীবনের ভয় নিয়ে। পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা আগের মতো মাঠে কাজ করছে না। তারা অফিসের মধ্য সীমাবদ্ধ থাকছে যে কারনে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে।
গাইবান্ধা পৌর শহরের থানাপাড়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের ভূমিকা না থাকায় আজ জেলা জুড়ে প্রায় প্রতিদিন লাশ পড়ছে। যে যার মতো আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। দ্রুত প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। পুলিশের সাথে সাধারন মানুষের দূরুত্ব বেড়ে গেছে এটিও কমাতে হবে।
একই কথা বললেন শহরের বাবু মিয়া। তিনি বলেন, দিনদিন পরিবেশটা অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) শরিফুল আলম বলেন, কয়েকটি ঘটনার পর পুলিশী নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে ও অপরাধ কর্মকান্ড বন্ধে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় জেলা জুড়ে নতুন করে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী গেল জানুয়ারি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত চুরি, ছিনতাই ও মাদকদ্রবসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনার অভিযোগে জেলার বিভিন্ন থানায় ৯শ ৯৩টি মামলা দায়ের হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ