বজ্রপাতে কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ, বরগুনা ও যশোর জেলায় সবমিলিয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিনের বিভিন্ন সময় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
কুমিল্লা
কুমিল্লার দুই উপজেলায় বজ্রাঘাতে দুই স্কুলশিক্ষার্থীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে মুরাদনগরে ও দুপুরের দিকে বরুড়ায় মোট চারজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন, উপজেলার দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া (কালীবাড়ি) এলাকার মৃত বীরচরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০), খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং একই এলাকার আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে বজ্রাঘাতে নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত যতিন্দ্র দাসের ছেলে ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০), খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের খয়েরপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১৪) এবং মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের রানীগঞ্জ গ্রামের মৃত আশ্রব আলীর স্ত্রী ফুলেছা বেগম।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অষ্টগ্রাম থানার ওসি রুহুল আমিন ও মিঠামইন থানার ওসি মো. শফিউল আলম।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচংয়ের হাওরে বজ্রাঘাতে এক কৃষক মারা গেছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। সোমবার সকালে বৃষ্টির সময় এই ঘটনা ঘটে।
হবিগঞ্জের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান জানান, সোমবার সকালে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের কালবাসী দাসশর ছেলে দূর্বাসা দাশ (৩৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান।
নেত্রকোনা
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় মাদরাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সকাল সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত আরাফাত মিয়া (৯) তিয়শ্রী গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে এবং স্থানীয় বাইতুল জান্নাত হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য মোতাহার বলেন, আরাফাত বাড়ির পাশের একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়তো। প্রতিদিনের মত ভোরে ফজরের নামাজ শেষে মাদ্রাসায় যাচ্ছিল সে। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। মাদরাসার সামনে পৌঁছলে হঠাৎ বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আরাফাত।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অলিদুজ্জামান বলেন, আরাফাত নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বজ্রপাতে মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
সুনামগঞ্জ
শাল্লা উপজেলায় হাওরে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর সময় বজ্রপাতে কলেজছাত্র মারা গেছেন। সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার আটগাঁও গ্রামের কালিকোটা হাওরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান শাল্লা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। নিহত রিমন তালুকদার আটগাঁও গ্রামের জাহেদ তালুকদারের ছেলে ও শাল্লা ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।
ওসি শফিকুল বলেন, বাড়ির পাশে কালিকোটা হাওরে নিজের চারটি গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন রিমন। এ সময় তীব্র ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে বজ্রপাতে রিমনসহ তার একটি গরুও মারা যায়। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বরগুনা
বরগুনার বেতাগীতে বজ্রাঘাতে ফোরকান মৃধা (৫৪) নামের এক কৃষক মারা গেছেন। সোমবার (হোসনাবাদ ইউনিয়নের ছোপখালী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় এক গৃহবধূ আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, সোমবার দুপুরে ফোরকান কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন। আকস্মিক বজ্রাঘাতে তিনি মারা যান।
যশোর
যশোরের শার্শা উপজেলার বেড়ি নারায়ণপুর গ্রামে বজ্রাঘাতে আমির হোসেন (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দুপুরে শার্শা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে বাড়ির পাশে ধান গাদা দেওয়ার সময় বজ্রাঘাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
যশোরের শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান জানান, ওই কৃষক আকাশে মেঘ দেখে কাটা ধান গাদা দিচ্ছিলেন। আকস্মিক বৃষ্টিতে বজ্রপাতের আঘাতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
বিডি প্রতিদিন/কেএ