বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি কখনোই অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। সম্প্রতি তাকে নিয়ে বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকন যেসব উপাধি উল্লেখ করে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদে এক বিবৃতিতে অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, তাকে নিয়ে আব্দুল হালিম খোকন যেসব বক্তব্য দিয়েছে তা মানহানিকর ও সম্পূর্ণ পরিকল্পিত মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। খোকনের দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রবিবার এক বিবৃতিতে অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, গত ১৬ এপ্রিল বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এসি লাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মোড়েলগঞ্জ পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের ১ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক শিকদার ফরিদুল ইসলাম এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকন।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমি (ড. ওবায়দুল ইসলাম) উপস্থিত ছিলাম। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে যখন আমার বক্তৃতার পালা আসে তখন আব্দুল হালিম খোকন আমাকে বক্তব্য দিতে অনুরোধ করার পূর্বে আমাকে বিভিন্ন বিশেষণে বিশেষায়িত করতে গিয়ে এমন অনেক অবাস্তব, মিথ্যা ও অবান্তর বিশেষণ দেন যা চরমভাবে আমার মানহানি করেছে। এমন অনেক মিথ্যা ও অবান্তর বিশেষণ দেন যা উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনে আমাকে চরম হেয় প্রতিপন্ন করেছে। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনা আমার জন্য এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জন্য চরম মানহানিকর ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার।
বিবৃতিতে বলা হয়, আব্দুল হালিম খোকন যেসব বিশেষণে আমাকে বিশেষায়িত করেছেন তা হুবহু উল্লেখ করা হলো- ‘আমি সরাসরি ওনার (অধ্যাপক ওবায়দুল) ছাত্র না, উনি সায়েন্স ফ্যাকাল্টির স্টুডেন্ট, আমি আর্টস ফ্যাকাল্টির স্টুডেন্ট, আমি ওনাকে কখনো ভাই বলে সম্বোধন করিনি, আমি ওনাকে সব সময় স্যার হিসেবে সম্বোধন করেছি সাদা দলের নেতা হিসেবে, সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে, সাদা দলের সভাপতি হিসেবে ১৭ বছর তাকে আমি আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে নেতৃত্ব দিতে দেখেছি। অনেক সময় আমার কাটা রাইফেল, অনেক সময় আমার বন্দুক, অনেক সময় আমার পিস্তল সেভ করেছেন আমার প্রিয় শিক্ষক। আমার প্রিয় শিক্ষক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম এখন আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখবেন।’
অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম প্রতিবাদ বিবৃতিতে বলেন, সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মী, সংবাদকর্মী, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সামনে জনাব আব্দুল হালিম খোকনের এরূপ বক্তব্যে শুধু আমার একার সম্মানহানি হয়নি, বরং সম্মানহানি হয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের। তার এ বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একটি সংগঠন! তার এ বক্তব্য আমার জীবনে কালিমালেপণন করেছে। অথচ ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি আমার জীবনে এমন অপবাদ কেউ দিতে পারবে না যে, আমি অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি সুতরাং আব্দুল হালিম খোকনের উক্ত বক্তব্য আমাকেই শুধু অপমাণিত করেনি বরং আমার প্রিয় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আরও বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করেছি। কখনো অস্ত্রকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করিনি। ছাত্রজীবন শেষ করে পেশাগত জীবনে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষকতা করে আসছি। শিক্ষকতার পাশাপাশি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষকদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের প্রায় সকল পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছি অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে। তারই পুরস্কার হিসেবে বিএনপি আমাকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) এর সভাপতির দায়িত্বও আমাকে দেওয়া হয়েছে। যা অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালনের চেষ্টা করছি।
অতএব বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকন আমাকে নিয়ে দেওয়া মিথ্যা বক্তব্যে আমার সম্মানের চরমভাবে হানি হয়েছে। একইসঙ্গে আমার এলাকায় অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমি আব্দুল হালিম খোকনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত