বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির দাবি জানিয়ে বলেছেন, ‘ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে দেশে বড় বড় পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৬৯ থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও সর্বশেষ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে ছাত্র সংগঠন ও ছাত্র রাজনীতির কারণে। বাংলাদেশের সংবিধান ছাত্র রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছে। ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে জনগণ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট রয়েছে, তা আস্তে আস্তে কেটে যাবে।’
আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রংপুর নগরীর একটি হোটেল মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সারাদেশে আমরা ক্যাম্পাসে সার্ভে করেছি। সেখানে শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতি চায় না। দীর্ঘ ১৫ বছর ছাত্র রাজনীতির কারণে যে ট্রমা তৈরী হয়েছে, সে কারণে ছাত্র রাজনীতি চায় না শিক্ষার্থীরা।ছাত্রশিবির এ সংকটকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা অনুধাবন ও সময় বিবেচনায় নিয়ে ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ তৈরীতে কাজ করছে ছাত্র শিবির।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে ভীতি তৈরী হয়েছিল, তা দূর করতে কাজ করছে ইসলামী ছাত্র শিবির। গঠন ও সেবামূলক ছাত্র রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে। এতে থাকবে শিক্ষা ও সেবা কাজে প্রতিযোগিতা। ছাত্র শিবিরের এ কার্যক্রমকে দেশের সকল ক্যাম্পাস স্বাগত জানিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। তারা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। নিঃসন্দেহে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। বর্তমানে এমন এক প্রজন্ম তৈরী হয়েছে, ছোট শিশু থেকে শুরু করে যুবক শ্রেণি পর্যন্ত সকলের মাঝে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা চিন্তা ও স্পিরিট কাজ করছে। এই জেনারেশন আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছরেও শেষ হবে না। এই মনস্তাত্ত্বিক জায়গার সাথে যুদ্ধ করে হাসিনা হটকারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে যারা চিন্তা করছেন তাদের জন্য সতর্কতা হিসেবে বলছি।’
রাজধানীতে শিক্ষার্থী হত্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র শিবির কোন ধরনের হত্যাকাণ্ডকে সাপোর্ট করে না। যদি কোন অপরাধী চিহ্নিত হয়, তাহলেও মব সৃষ্টি করে তাকে হত্যার পক্ষে আমরা নই। দেশে আইন ও বিচারের মাধ্যমে তার বিচার হবে। দেশের এ কালচার খুব দুঃখজনক। ৫ আগস্টের পরও এটি চলমান রয়েছে। একটি পক্ষ আরেকটি পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য হত্যাকাণ্ডকে টুলস হিসেবে ব্যবহার করছে।কোন হত্যাকেণ্ডের ঘটনা ঘটলে এটিকে নিয়ে রাজনীতি নয় বরং ন্যায় বিচার ও কিভাবে সুষ্ঠু সমাধান করা যায় এমন রাজনীতির সংস্কৃতি থাকা উচিত।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ছাত্র শিবির কেন্দ্রীয় কমিটির দাওয়াহ সম্পাদক মিজবাহুল করিম, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ, মহানগর সভাপতি নুরুল হুদা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি জুয়েল রানাসহ ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ