বালু ভর্তি জিও ব্যাগ যেমন পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকতর সৌন্দর্য হারাচ্ছে, তেমনি পর্যটকের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ব্যাগ কোনটা ছিড়ে বেরিয়ে এসেছে বালু। আবার অনেক কোনটার উপর শ্যাওলা জমে পিছলা হয়ে গেছে। একই সাথে সৃষ্টি হয়েছে ছোটো-বড় গর্তের। জোয়ারের সময় থাকে না ওয়াকিং জোন। এমন অবস্থায় আগত পর্যটকরা সমুদ্রে গোসলে নেমে প্রায়শই দুর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে। কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টসহ পূর্ব ও পশ্চিম দিকে রক্ষাকল্পে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব স্থাপন করে পাউবো কতৃপক্ষ। তবে সৈকত রক্ষায় স্থায়ীভাবে কাজ না করায় সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি এতে বর্তমানে দুর্ঘটনায় শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা। এ কারণে পর্যটক আগমনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পরে এমন আশঙ্কা করেছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈকত রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো ২০১৮ সালের শেষের দিকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সাগরের প্রবল জোয়ার আর ঢেউয়ে বালু ক্ষয়ের কারণে প্রতিবছরই ভাঙছে কুয়াকাটা সৈকত। একই সাথে বিলীন হচ্ছে এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা। নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সৈকত রক্ষার নামে পাউবো কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও বাস্তবে তেমন কাজে আসেনি।
এদিকে সৈকত রাক্ষয় যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা বেশিরভাগই সাময়িক। ফলে সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, আশপাশের স্থাপনাও হুমকির মুখে পড়ছে। এসব সমস্যা গুলো তুলে ধরার জন্য সৈকতে নেই কোনো সচেতনতা ব্যবস্থামূলক সাইনবোর্ড কিংবা জরুরি নির্দেশিত কোনো চিহ্ন। অনেকেই জোয়ারের সময় কোনো ধারণা ছাড়াই গোসলে নেমে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার শিকার হয়।
পর্যটকরা জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত সাগরকন্যা কুয়াকাটা। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মতো মনলোভা দৃশ্য দেখতে দেশ-বিদেশের প্রচুর সংখ্যক পর্যটক আসে। তাই সৈকত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিৎ বলে এমটাই মনে করেন তারা।
পর্যটক জহিরুল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভালো লাগলেও সৈকতের অবস্থা খুবই খারাপ। যত্রযত্র বালু ভর্তি জিওব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাও আবার শ্যাওলা পাড়া পিচ্ছল। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে পুরনো স্থাপনার অংশবিশেষ জেগে উঠেছে। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা হওয়ার আশংকা করেছেন তিনি।
অপর এক পর্যটক সিফাত বলেন, এসব জিও ব্যাগ থেকে বালু বেরিয়ে এসে ছোটো-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও বিশেষ করে জোয়ারের সময় গোসলে নেমে অনেকে আহত হতে পারে।
পর্যটন ব্যবসায়ী বীচ ট্যুরিজমের স্বত্ত্বাধিকারী মো.আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, বর্তমানে যে স্থাপনার অংশবিশেষ বেরিয়ে এসেছে সেগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন।এর আগেও বেশ কিছু ভবনের অংশ বিশেষ বেরিয়ে এসেছিল। সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুরনো জিও ব্যাগ ও স্থাপনা অপসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ