রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে আলু, পেঁয়াজসহ বেশ কয়েকটি ফসল। বেশি পরিমাণ জমিতে আবাদ করেও ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষক।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার হেক্টরের মত। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ১১৮ শতাংশ জমিতে বেশি আলু আবাদ হয়েছে। প্রতি বছর আলুর উৎপাদন গড়ে হেক্টর প্রতি ২২/২৪ টন হলেও এবার প্রতিহেক্টর উৎপাদন হয়েছে ২৮ মেট্রিক টন করে। বর্তমানে বাজারে পাইকারি আলু বিক্রি হচ্ছে ১২/১৪ টাকা কেজি। খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৭/১৮ টাকা। এক দোন (২২শতক) জমিতে আলুর বীজ লাগে ২৪ হাজার টাকার। রোপণ, সার, উত্তোলন ইত্যাদির খরচ পরে ১৯ হাজার টাকা। এক দোন জমিতে মোট খরচ হয় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। উৎপাদন হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ কেজি। সেই হিসেবে এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৯ থেকে ২০ টাকা। হিমাগারে আলু রাখলে কেজি প্রতি আরও যোগ হবে ৮ টাকা। সব মিলিয়ে দেখা গেছে এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৮ টাকা। উৎপাদন খরচের চেয়ে ৮ থেকে ১০ টাকা লোকসান হচ্ছে আলুতে।
পিঁয়াজও লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে। পিঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ১৪৯ হেক্টরে। সেখানের আবাদ হয়েছে ১২ হাজার হেক্টরের ওপরে। লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে ১০০ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি উৎপাদন হয়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে পিঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে আরও ৩/৪ টাকা কম। ফলে কৃষকদের পিঁয়াজেও লোকসানের আশঙ্কা করছেন। তেমনি ভুট্টার আবাদ হয়েছে লক্ষ্য মাত্রার ১০৯ শতাংশ বেশি। জিরা উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ১০৬ শতাংশ, শাক-সবজি ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া কালোজিরাসহ আরও কয়েকটি ফসল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে।
কাউনিয়ার কৃষক আফজাল হোসেন পীরগাছার বুলবুল হোসেন বলেন, এবার আলু আবাদ করে তারা লোকসানে পড়েছেন। পিঁয়াজের লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের অতিরিক্ত পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদন হলে দাম কিছুটা কমতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। এসব বিষয় কৃষি বিভাগ মনিটরিং করছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল