আজ ১৫ নভেম্বর, ভয়াল সিডরের ১৮ বছর। ২০০৭ সালের এই দিনে দানবরূপী ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল বাগেরহাটসহ দেশের উপকূলীয় জনপদ। মুহূর্তে ভেসে গিয়েছিল মানুষের বসতঘর, গবাদি পশু, গাছপালা, খেতের ফসল। চারদিকে ছিল শুধু লাশ আর লাশ। প্রবল ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে শরণখোলা পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। প্রাণ হারিয়েছিল সহস্রাধিক মানুষ। সবখানেই শোনা যাচ্ছিল স্বজনহারা মানুষের বিলাপ। সেই বিভীষিকা আজও ভুলতে পারেনি শরণখোলার মানুষ, কাটেনি আতঙ্ক। সিডরের আঘাতে বলেশ্বর নদের নাজুক বেড়িবাঁধ ভেঙে জলোচ্ছ্বাসে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় শরণখোলার সাউথখালীসহ আশপাশ এলাকা। সংশ্লিষ্টরা জানান, সিডরের ৯ বছর পর বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারে ৬২ কিলোমিটার উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। এর মধ্যে বলেশ্বর তীরে শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলার সীমানা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শুরু হয় প্রায় ২০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পে (সিইআইপি-১) ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি শুরু হয় এ বাঁধ নির্মাণের কাজ। সিএইচডব্লিউই নামে চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এ কাজ বাস্তবায়ন করে। তিন বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটি শেষ হতে লাগে প্রায় সাত বছর। কাজ শেষে ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বাঁধটি হস্তান্তর করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু হস্তান্তরের দুই বছর না যেতেই বাঁধটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বলেশ্বরের তীররক্ষা বাঁধের ২০ কিলোমিটারের বেশির ভাগ স্থানেই ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। অন্তত ১১ স্থানে সিসি ব্লক ধসে গেছে। মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই এবং নদীশাসন না করে নির্মাণের ফলে বাঁধ এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বাঁধের বর্তমান অবস্থা শরণখোলাবাসীর মনে জাগিয়ে তোলে সেই ভয়ংকর রাতের দুর্বিষহ স্মৃতি। আতঙ্কে দিন কাটছে বলেশ্বর তীরের বাসিন্দাদের। নদতীরবর্তী গাবতলা গ্রামের মিজান হাওলাদার, দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর খান, উত্তর সাউথখালী গ্রামের আনোয়ার হাওলাদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘টেকসই বেড়িবাঁধ ছিল না বলে সিডরে আমরা স্বজন হারিয়েছি। ঘরবাড়ি সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এত জীবন ও সম্পদের বিনিময়ে একটি টেকসই ও উঁচু বেড়িবাঁধ চেয়েছিলাম। উঁচু বাঁধ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা টেকসই হয়নি। নদীশাসন না করে বাঁধ নির্মাণ করায় বছর না যেতেই ভাঙন শুরু হয়েছে। দ্রুত নদীশাসনের ব্যবস্থা করা না হলে দুই-তিন বছরের মধ্যেই বাঁধ ভেঙে বিলীন হয়ে যাবে।’ শরণখোলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত বলেন, ‘নদীশাসন ছাড়া বাঁধ টেকসই হওয়া সম্ভব নয়। তৎকালীন সরকার ও বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাঁধ নির্মাণে নদীশাসনের ব্যবস্থা না করে অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। ব্যাপক দুর্নীতিও হয়েছে এখানে। এতে শুধু বাঁধ উঁচুই হয়েছে, কিন্তু টেকসই হয়নি।’ বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ১ হাজার মিটার এলাকার ভাঙন রোধে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলার বগী এলাকার প্রায় ৭০০ মিটারে বালুভর্তি জিও ব্যাগ এবং সিসি ব্লক ও মোরেলগঞ্জ সীমানার ফাসিয়াতলায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। এ কাজ শেষ হলেই জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলাবাসী।’
শিরোনাম
- শেখ হাসিনাসহ তিনজনের অপরাধ প্রমাণিত
- রাজস্থানের কোচ হিসেবে ফিরলেন কিংবদন্তি সাঙ্গাকারা
- ৬ জুলাই যোদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড পাঠাচ্ছে সরকার
- জবি ছাত্রদল-ছাত্র অধিকারের সমন্বিত 'ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান' প্যানেল ঘোষণা
- ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে থেকে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
- রাজশাহীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীসহ গ্রেপ্তার ২৭
- ডিবির অভিযানে আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মী গ্রেফতার
- ঝিনাইদহে প্রবাসী হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
- এখন থেকে অনলাইনেই পাওয়া যাবে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অনাপত্তি সনদপত্র
- ‘সৎ সাহস থাকলে হাসিনা বিচারের মুখোমুখি হতেন’
- বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে ফের পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ
- স্ত্রী-মেয়েসহ সাবেক মন্ত্রী নানকের ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- বিপিএল থেকে নাম প্রত্যাহার তামিমের
- মাদারীপুরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, টহল জোরদার
- ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছ ফেলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
- নারায়ণগঞ্জ শহরে জামায়াতের অবস্থান কর্মসূচি
- সাভার ও ধামরাইয়ে নাশকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১৫
- ট্রাইব্যুনালে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া চলছে
- রাজধানীর নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন
- হাসিনার মামলার রায় দিতে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চলছে
বাগেরহাট
আতঙ্ক কাটেনি ১৮ বছরেও
আজ সুপার সাইক্লোন সিডর দিবস
শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর