রোপা আমন খেতে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন লালমনিরহাটের কৃষকরা। এসব জমিতে পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করেও ফল পাওয়া যাচ্ছে না, বলছেন তারা। লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৮৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৮৬ হাজার টন। ইতোমধ্যে ৮৫ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন আবাদ হয়েছে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এ ধানের চারা রোপণ করা হয়। অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে ধান কাটা হবে। সরেজমিন দেখা যায়, মাজরা পোকার আক্রমণে ধানের পাতা ছিদ্র হয়ে বাদামি রং ধারণ করেছে। এসব পোকা কাণ্ডের ভিতর থেকে খাওয়া শুরু করে। মোগলহাট ইউনিয়নে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। পাতা মোড়ানো পোকা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। ক্ষতিগ্রস্ত পাতায় সাদা লম্বা দাগ দেখা যায়। খুব বেশি ক্ষতি হলে পাতাগুলো পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়।
মোগলহাট ইউনিয়নের কৃষক কমল কান্তি বর্মন, মো. রবিউল ইসলাম, হরিপদ রায় হরি বলেন, রোপা-আমন খেতে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে তারা এখন দিশাহারা। কীটনাশক ছিটিয়েও এ পোকা দমন করা যাচ্ছে না। এক বিঘা জমিতে এক দফা কীটনাশক প্রয়োগে ব্যয় হচ্ছে ৫০০ টাকা। ফলে উৎপাদন খরচও বাড়ছে। ফলন ভালো না হলে কী করবেন, বুঝতে পারছেন না। ফুলগাছ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব বলেন, এ সময়ে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার কিছু আক্রমণ হয়। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়াল খোওয়া গ্রামের চাষি হাসিম, শাহ আলী, আবদুস সালাম ও আবু সাঈদ জানান, তাদের ১৬ বিঘা জমিতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না। কৃষি বিভাগের কোনো মাঠ পর্যায়ের কর্মী এ পর্যন্ত আসেননি। দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ধান খেতে পোকা দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মাঠ কর্মীদের।