লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ২৫ হাজার গ্রাহক। ঠিকমতো পানি না পেলেও বিল সময়মতোই আসে অভিযোগ তাদের। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। পানির সংকটের জন্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটকে দায়ী করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে জানিয়েছে তারা। একই সঙ্গে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে মেঘনা নদী থেকে পানি সংগ্রহের বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণের আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। সূত্র জানায়, ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত লক্ষ্মীপুর পৌরসভা। এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। এখানে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিতে রামগতি সড়ক, বাস টার্মিনাল, পুরাতন গরুহাটা ও বাঞ্চানগর এলাকায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় চারটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। ৫০ শতাংশ মানুষকে পানি সরবরাহের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে দাবি পৌর কর্তৃপক্ষের। তবে বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় এখন সুপেয় পানির সংকট চলছে। সমসেরাবাদ, লামচরী, মোবারক কলোনি, কলেজ রোড, আজিজিয়া মাদরাসা রোডসহ কয়েকটি বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, পানির জন্য হাহাকার করছেন বাসিন্দারা। কলস, জগসহ বিভিন্ন পাত্র হাতে পানির অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন ধরেছেন অনেকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কেউ কেউ পানি পাচ্ছেন না।
রাকিব হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, রুনা আক্তার ও নুরজাহান বেগমসহ কয়েকজন অভিযোগ করেন, প্রতিদিন পানির অপেক্ষায় থাকতে হয়। কখনো পানি আসে কখনো আসে না। আবার অনেক সময় সংগ্রহের আগেই পানি শেষ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে পাইপ লাইনে ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি আসে। এ পানি রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহার করা যায় না। তারা বলেন, পাইপ লাইনে পানি না পেয়ে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়। প্রতি মাসে পানির বিল (৬০০ টাকা) দিতে হয়, কিন্তু পানি মেলে না। নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ পৌর এলাকার বাসিন্দারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে পানির সংকট চলছে। শিল্প কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একই অবস্থা জানান ব্যবসায়ীরা। সুপেয় পানি সংকট ও প্রতিকার বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পৌর প্রশাসক জসীম উদ্দিন বলেন, ২৫ হাজারের বেশি পানির গ্রাহক রয়েছেন। ৫০ শতাংশ মানুষ পানি সরবরাহের আওতায় এসেছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে তাদেরও শতভাগ পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমাধান হলে এ সমস্যা থাকবে না। ভবিষ্যতে পানি সরবরাহের এলাকা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।