মঞ্চ থেকে ঘোষণা এলো, প্রত্যেকের সামনে থাকা সেলাই মেশিন তাদের জন্য। মেশিন নিয়ে যাওয়ার যাতায়াত ভাড়াটাও দিয়ে দেওয়া হবে। খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবার মুখে হাসির ঝিলিক। হাত-পা চলতে শুরু করল সেলাই মেশিনে। এই দৃশ্য দেখা গেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গতকাল সকালে।
অসহায় পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে বাঞ্ছারামপুরে ৬০ নারীকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ২৩ জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। ৬৪ জেলায়ই এ কার্যক্রম চলবে। স্বামী মারা যাওয়ার পর মায়ের সঙ্গে থাকেন বাঁশগাড়ি গ্রামের শাহীনূর বেগম। কাঁথা সেলাই আর ছাগল পালনের আয় দিয়ে চলত দুজনের সংসার। গতকাল সেলাই মেশিন পাওয়ার পর কথা হয় তার সঙ্গে। এখন আরেকটু সচ্ছল জীবনের আশা করছেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ময়নাল হোসেন। বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ কিন্তু আর্থিক দুর্বল তাদের জন্য কিছু করতে নির্দেশ দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান। এরই আলোকে কাজ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেখানে স্কুল নেই সেখানে স্কুল আর লাইব্রেরি করা হয়েছে, শিক্ষাবৃত্তিও দেওয়া হচ্ছে। উপার্জনের জন্য সেলাই মেশিন দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের আরেকটা উদ্যোগ হলো ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ, যা পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। একমাত্র বসুন্ধরা গ্রুপই সুদমুক্ত ঋণ দেয়। চক্ষু হাসপাতালে বাছাই করা রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করানো হয়।
অধ্যাপক চাঁন মিয়া সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান।
সেলাই মেশিন পেয়ে উপকারভোগীরা বসুন্ধরার জন্য দোয়া করেন। শিক্ষার্থী ইয়াছমিন আক্তার বলেন, চা বিক্রেতা বাবার একার পক্ষে সাতজনের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। এই সেলাই মেশিন নিয়ে আমি আয় করতে পারব, যা সংসার চালাতে বেশ কাজে লাগবে। বসুন্ধরার জন্য দোয়া রইল।
মেয়ের সঙ্গে আসা শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আবদুল আউয়াল বলেন, বসুন্ধরা আমার পরিবারের পাশে ছিল আগে থেকেই। আমার মেয়েদের তারা শিক্ষাবৃত্তি দিয়েছে। এখন এক মেয়েকে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে মেশিন দিল। তাদের উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না।