বড় কোনো সাফল্য নয়। তার পরও বাংলাদেশের ফুটবলের অন্যরকম দিন ছিল গতকাল। এমন দিন কখনো দেখা যায়নি। হাট বা মেলা যাই বলা হোক, এত খেলোয়াড় নিয়ে কখনো ট্রয়ালের ব্যবস্থা করেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তাও আবার সবাই বাংলাদেশি বংশো™ভূত প্রবাসী ফুটবলার। ৪৮ জন উড়ে এসেছেন ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ থেকে। শুক্রবারই ট্রয়ালে নামার নাম নিবন্ধন করেছেন তারা। সবার স্বপ্ন একটাই- স্বপ্নের লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানো। মূলত বয়সভিত্তিক দলে সুযোগের জন্য এ ট্রায়াল। অনূর্ধ্ব-১৯ ও ২৩ দলে জায়গা পেতেই এ পরীক্ষা। তবে অতিরিক্ত ভালো করলে জাতীয় দলেও জায়গা হতে পারে। শুধু কি তাই, পছন্দ হলে পেশাদার লিগের ক্লাবগুলোও দলভুক্ত করতে পারবে। শেকড়ের টানে নিজ খরচায় নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে এসেছেন।
এশিয়াকাপ বাছাইপর্বে তিন প্রবাসী জাতীয় দলে নেমেছেন। তবে উৎসাহটা মূলত হামজা দেওয়ান চৌধুরীকে ঘিরেই। ইংলিশ লিগে খেলা এ ফুটবলারের অভিষেক হওয়ার পরই সামিত সোম ও ফাহমিদুল ইসলামরা বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামেন। সামনে হংকংয়ের বিপক্ষে নতুন প্রবাসীদের দেখা যেতে পারে। তরুণরাও ট্রয়াল দিতে ছুটে এসেছেন। এত অধিকসংখ্যক প্রবাসী খেলোয়াড় বাংলাদেশে যোগ্যতা প্রমাণ দিতে আসবেন তা স্বপ্নেও ভাবা যায়নি। ফুটবলের দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করেছে। ট্রয়ালে সমন্বক হিসেবে কাজ করছেন সাকিব মাহমুদ। যিনি জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বন্ধু। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু, বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ছাইদ হাসান কানন, লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের হেড কোচ আলফাজ আহমেদ, বসুন্ধরা কিংসের মাহবুব হোসেন রক্সি ও জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু বাছাইয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা তা পর্যবেক্ষণ করছেন। বলা যায় কোচিংয়ে দেশের সেরা প্যানেলই যোগ্যদের বেছে নেবেন। আশা করা যায়, তিন দিনব্যাপী এ প্রক্রিয়ায় ভালো কয়েকজন ভবিষ্যৎ তারকার সন্ধান মিলবে। যা থেকে উপকৃত হবে দেশের ফুটবল।
ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়াম উৎসমুখর পরিবেশে নেক্সট গ্লোবাল স্টারট্রায়াল শুরু হয়। অতিরিক্ত গরম অনুভব করলেও সবাই যোগ্যতা প্রদর্শনে ছিলেন মনোযোগী। টিটু বলেন, ‘আমার খুব ভালো লেগেছে ছেলেদের আগ্রহ দেখে। তারা জানে, বাছাই প্রক্রিয়ায় কেউ থাকবে বা থাকবে না। তার পরও যোগ্যতা প্রমাণে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। প্রথম দিনে ফিটনেস প্রদর্শনীর পাশাপাশি ভাগ হয়ে ম্যাচ খেলেছেন ট্রয়ালে থাকা প্রবাসী ফুটবলাররা। জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার শেখ মো. আসলাম বলেন, বাফুফের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। তবে আমার চাওয়া থাকবে স্থানীয় তরুণ ফুটবলারদের নিয়েও যেন ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হয়। তবে সিলেকশন প্রক্রিয়া খুবই স্বচ্ছ হতে হবে।’ এনিয়ে যেন বিতর্ক না ওঠে।