‘অর্থনীতি শিক্ষা, দেশ গড়ার দীক্ষা’ প্রতিপাদ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৫-এর চট্টগ্রামের জাতীয় পর্ব। চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনলাইনে আঞ্চলিক বাছাই পর্ব শেষ করে জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে অলিম্পিয়াডের পর্বটি আয়োজিত হয়।
শুক্রবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম কলেজে শুরু হয় অলিম্পিয়াড পর্ব। এতে অংশ নেন ৩০০ শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়—দুই ভাগে আলাদা করে পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সেন্টার ফর ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ (সিওয়াইআই)।
অলিম্পিয়াড শেষে আয়োজন করা হয় ‘বক্তব্য ও প্রশ্নোত্তর পর্ব’। বাংলাদেশ ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডের চেয়ারম্যান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর মোহাম্মদ মনসুরুল হক, শিক্ষাবিদ প্রফেসর মু. সিকান্দার খান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুজাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড কার্যকরী কমিটির সভাপতি আল আমিন পারভেজ, সেন্টার ফর ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ-এর প্রতিষ্ঠাতা সাইদ খান সাগর ও চট্টগ্রাম ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কাজী সদরুল্লাহ রাকিব।
অলিম্পিয়াডে স্কুল-কলেজ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন ঢাকার মাস্টারমাইন্ড স্কুলের সুহা আহসান, দ্বিতীয় হন গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তানভীর ইসলাম ও তৃতীয় হন প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মিসবা জাকারিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগে প্রথম হন চবির এ এম আবির হাসান, দ্বিতীয় হন চবির জোনায়েদ সামী ও তৃতীয় হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাতিন ইলহাম। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে বিজয়ীরা ন্যাশনাল ক্যাম্পে অংশ নেবেন, সেখান থেকে নির্বাচিতরা যাবেন আজারবাইজানের বাকুতে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফারুক-ই-আজম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিষয়ক এ ধরনের অনুষ্ঠানকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ঋণকে বিশ্ব অর্থনীতির বিশেষ অবদান স্বরূপ তরুণ প্রজন্মকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই। তরুণ প্রজন্ম অর্থনীতি নিয়ে ভাবলে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে।
প্রধান বক্তা মিজানুর রহমান বলেন, অলিম্পিয়াড হলো তাত্ত্বিক পড়াশোনা আর বাস্তবিক প্রয়োগের মাঝে যোগসূত্র তৈরিকারী। এই অলিম্পিয়াডে যারা অংশগ্রহণ করেন, তাদের জীবনবোধ ও বাস্তবিক জ্ঞান অন্যদের চেয়ে ভালো হয়। এই অলিম্পিয়াড আরও সমৃদ্ধ হোক।
সভাপতির বক্তব্যে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড নিছক এনজিও কাজ কিংবা ইভেন্ট নয়। এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। একটি সুগঠিত জাতি গঠন করতে হলে নাগরিকদের অর্থনৈতিক বোধ প্রগাঢ় হওয়া বাধ্যতামূলক। ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড দেশজুড়ে সেই সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে। চট্টগ্রামের মানুষদেরকে সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে আরও বেশি সহায়ক ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান তিনি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল