‘প্রতিবন্ধী হলেও আমরা শিক্ষার্থী, আমরা মানুষ, আমাদেরও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আছে। কিন্তু চাকসু নির্বাচনে সেই স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই’— এমন অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, নির্বাচন কমিশন ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটের কোনো ব্যবস্থা করেনি। ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কারো সাহায্য নিয়ে নিয়ে গিয়ে ভোট দিতে হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে চাকসু ভবনের প্রতিবন্ধী ভোটকেন্দ্রে এসে এসব অভিযোগ করেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিবির প্যানেলের নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আকাশ দাশ।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবন্ধীরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারছি না। আমাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবুও আমরা খুশি, ৩৬ বছর পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে। তবে আগামী নির্বাচনে এই ব্যবস্থাটি নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনীতি বিভাগের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন বলেন, ৩৬ বছর পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে, এতে আনন্দিত। কিন্তু আরও আনন্দিত হতাম যদি নিজে ভোট দিতে পারতাম। এখন আমার ভোট দিতে অন্যের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। ব্রেইল পদ্ধতিতে ভবিষ্যতে ভোটের ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
বাংলা বিভাগের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আরিফুর ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছে। নির্বাচন কমিশনের এটা জানা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু তারা আমাদের কথা বিবেচনায় নেয়নি। পড়ালেখা যে পদ্ধতি করি, সেই পদ্ধতিতে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়নি।
একই ধরনের অভিযোগ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সাইমুন আক্তারের। তিনি বলেন, আমি একা এসেছি ভোট দিতে, কিন্তু কাউকে সঙ্গে না আনায় এখনো ভোট দিতে পারিনি। সঙ্গে কাউকে নিয়ে আসতে হবে, সেটি আগে বলে দেওয়া দরকার ছিল। ব্রেইল পদ্ধতি ছাড়া আমরা প্রতিবন্ধীরা ভোট দিতে পারি না। আমরা পড়ালেখা করি ব্রেইল পদ্ধতিতে, ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটের পেপার তৈরি করা দরকার ছিল।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।
চাকসু ভবনের তৃতীয় তলায় প্রতিবন্ধীদের ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হারুন রশিদ বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মোট ভোটার ৭৭ জন। তার মধ্যে দুপুর সোয়া ১টার মধ্যে ১৬ জন ভোট দিয়েছেন। আশা করি ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়বে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ