‘সূর্য যেদিকে থাকে ফুলের মুখও থাকে সেদিকে। তাই এটাকে সূর্যমুখী ফুল বলে।’ সূর্যমুখী চাষিরা জানান, সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তেল ও খৈল হয়। এ ছাড়া ফুলের খেতে মৌচাক বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মধুও সংগ্রহ করা যায় এবং শুকিয়ে যাওয়া গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়...
সূর্যমুখী ফুল চাষ করে লাভের স্বপ্ন বুনছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কৃষকরা। স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ বেড়েছে নাচোলে। দেখা গেছে, সূর্যমুখী চাষ করা খেতে এখন ফুলের সমারোহ। হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল পূর্ণতা নিয়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে। সবুজ পাতার আড়ালে মুখ উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সূর্যমুখী। চারদিকে সবুজের মাঝে হলুদের সমারোহ। আর এই হলুদ প্রকৃতিকে করেছে আরও সুন্দর। যেন সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছে পুরো মাঠ।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলের দেওপাড়া গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ৫০ শতক জমিতে এবার সূর্যমুখী চাষ করছেন। তিনি দুই বছর ধরে সূর্যমুখীর চাষ করছেন। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, কারিগরি সহযোগিতা দেওয়ায় এখান থেকে ভালো লাভের আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘গত বছর ভালো লাভ করেছি। এটা জানাজানি হওয়ার পর এবার নাচোল উপজেলায় অনেকেই সূর্যমুখী চাষ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘সূর্য যেদিকে থাকে ফুলের মুখও থাকে সেদিকে। তাই এটাকে সূর্যমুখী ফুল বলে।’ অন্য সূর্যমুখী চাষিরা জানান, সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তেল ও খৈল হয়। এ ছাড়া ফুলের খেতে মৌচাক বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মধুও সংগ্রহ করা যায় এবং শুকিয়ে যাওয়া গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। সূর্যমুখী বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যেই ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারেন কৃষক। চাষিদের মতে, কম খরচে ও অতি অল্প সময়ে সূর্যমুখী ফুল চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। আগামীতে নাচোল উপজেলায় সূর্যমুখী চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
এ ব্যাপারে নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার সালেহ আকরাম বলেন, ‘সরকারি সহায়তা ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে সূর্যমুখী চাষ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। সৌন্দর্য ও অর্থনৈতিক লাভ কৃষকদের জীবনে নতুন আশার আলো যোগ করছে এই সূর্যমুখী ফুল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, কীটনাশক সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছি। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এই বরেন্দ্র অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ আরও বাড়বে।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই