বিশ্বজগতের এক দূরবর্তী প্রান্তে বিজ্ঞানীরা এমন এক রহস্যময় অদৃশ্য বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন, যার ভর সূর্যের চেয়ে প্রায় ১০ লাখ গুণ বেশি। তবে এখনো এর প্রকৃতি বা গঠন ঠিক কী, তা বিজ্ঞানীরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, বস্তুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন (একশ কোটি × ১০) আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এটি কোনো আলো বিকিরণ করে না, তাই সরাসরি দেখা যায় না। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এটি হয়তো ডার্ক মেটার এর ছোট একটি অংশ, অথবা এটি হতে পারে একটি ক্ষুদ্র, নিষ্ক্রিয় বামন ছায়াপথ।
গবেষণার ফলাফল দুটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকীতে এ প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বস্তুটি আবিষ্কার করেন মহাকর্ষীয় লেন্সিং নামের এক বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এতে কোনো ভারী বস্তুর মহাকর্ষ শক্তি দূরের তারকা বা ছায়াপথের আলো বাঁকিয়ে দেয়, ফলে অদৃশ্য বস্তুর উপস্থিতি বোঝা যায়।
এভাবেই বিজ্ঞানীরা বস্তুটির অস্তিত্ব ধরতে সক্ষম হন। এই প্রাচীন বস্তুকে দেখা গেছে এমন এক সময়ের অবস্থায়, যখন পৃথিবীর বয়স ছিল মাত্র ৬.৫ বিলিয়ন বছর। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্রিস ফাসনাখট বলেন, এত দূরের এমন ক্ষুদ্র ভরযুক্ত একটি বস্তুর সন্ধান পাওয়া সত্যিই অসাধারণ সাফল্য। অন্ধকার পদার্থের প্রকৃতি বোঝার জন্য এমন ক্ষুদ্র বস্তু খুঁজে বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার প্রধান লেখক জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডেভন পাওয়েল বলেন, যেসব বস্তু কোনো আলো বিকিরণ করে না, সেগুলো খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন। আমরা তাই দূরবর্তী ছায়াপথকে ব্যাকলাইট (পেছনের আলো) হিসেবে ব্যবহার করে তাদের মহাকর্ষীয় প্রভাব শনাক্ত করি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল