বর্ণাঢ্য আয়োজনে চৈত্রসংক্রান্তির মধ্য দিয়ে ১৪৩১ কে বিদায় জানিয়ে বঙ্গাব্দ ১৪৩২-কে স্বাগত জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ। সব জরাজীর্ণতা ও গ্লানি মুছে ফেলে নতুন দিনের প্রত্যাশায় ও ১৪৩২-এ সফলতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যয়ে পুরোনো বছরকে বিদায় জানায় দেশবাসী। নাচ, গান, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বাউল গানের মধ্য দিয়ে সাজানো ছিল চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠানমালা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণির সব বয়সি মানুষ মেতে ওঠে ১৪৩১ কে বিদায় জানানোর এই আয়োজনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠানমালা।
শিল্পকলা একাডেমি : সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয় আয়োজন। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল ‘ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’। এতে ব্যান্ডসংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ওয়ারফেজ, ভাইকিংস, এভোয়েড রাফা, দলছুট, লালন, আর্টসেল, স্টোনফ্রি, মারমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ডদল চিম্বুক, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ব্যান্ডদল ইমাং, চাকমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ডদল ইনভোকেশন, খাসিয়া সম্প্রদায়ের ব্যান্ডদল ইউনিটি এবং গারো সম্প্রদায়ের ব্যান্ডদল এফ মাইনর।
উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী : ‘ভুলে যাই দ্বন্দ্ব কেটে যাক ভ্রান্তি, শুভ-বার্তা আনুক চৈত্রসংক্রান্তি’- এই স্লোগানে চৈত্রসংক্রান্তির মধ্য দিয়ে ১৪৩১ কে বিদায় জানিয়েছে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী। বিকাল সাড়ে ৫টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশে সত্যেন সেন চত্বরে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠানমালা। লোকগানের আসর, আবৃত্তি ও নাচসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দিয়ে সাজানো ছিল এই আয়োজন।
এবারের আয়োজনে বাংলার লোকসংগীতের বিভিন্ন ধারা পরিবেশন করে উদীচী কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর এবং বিভিন্ন শাখা সংসদের শিল্পীরা। আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করে সংগঠনটির আবৃত্তি ও নৃত্যশিল্পীরা।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান
বিকাল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় কার্যক্রম। শিশুদের বাংলা নববর্ষ বিষয়ক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন। এরপর সংস্কৃতি স্বজনদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
চারুকলা অনুষদ
বৈশাখ উদ্যাপনের অন্যতম কার্যক্রম হিসেবে চারুকলার বকুলতলায় বাংলা বছরের শেষ দিন চৈত্রসংক্রান্তির ও নববর্ষবরণের সাংস্কৃতিক আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। নাচ, গান, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে সাজানো ছিল চারুকলা অনুষদের এই আয়োজন। বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠান চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।