বোকা জুনিয়র্সের সমর্থকদের ‘ওলে ওলে ওলে’ কোরাস একবার শুরু হলে সহজে শেষ হয় না। তারা গাইতেই থাকেন। মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে বোকার সমর্থকদের দাপট দেখা গেল আরও একবার। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে বায়ার্ন মিউনিখ-বোকা জুনিয়র্স মুখোমুখি হয় এ স্টেডিয়ামে। ইউরোপের অন্যতম সেরা দলের সমর্থকরা হারিয়ে যান বোকার সমুদ্রে।
হার্ড রক স্টেডিয়াম মায়ামির সমুদ্র তীর থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত। আটলান্টিকের গভীর থেকে ছুটে আসার বাতাসের তীব্রতা অনুভব করা যায় এই স্টেডিয়ামে। এখানে কখনো রোদ কখনো বৃষ্টির দেখা মেলে। প্রকৃতি কখন কোন রূপে দেখা দেবে বলা কঠিন। ফ্লোরিডার এই শহর প্রায়ই আটলান্টিকের সাইক্লোনে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আপাতত মায়ামিতে দেখা যাচ্ছে ফুটবল সমর্থকদের সাইক্লোন। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দর্শকরা কাটিয়ে দিচ্ছেন বোকা জুনিয়র্সের সমর্থকরা। শুক্রবার মধ্যরাতে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে বোকা জুনিয়র্স। তবে আর্জেন্টাইন ক্লাবটির সমর্থকরা পরাজয়ের পরও দীর্ঘ সময় দলের সমর্থনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন। তারা গান গেয়েছেন সমস্বরে। সমর্থন জানিয়েছেন প্রিয় ক্লাবকে। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করার সুযোগ এখনো আছে বোকার। পরের ম্যাচে অকল্যান্ড সিটির বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিততে হবে তাদেরকে। পাশাপাশি বেনফিকাকে হারতে হবে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে।
বায়ার্ন মিউনিখের পক্ষে শুক্রবার ১৮ মিনিটে গোল করেন হ্যারি কেইন। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল জার্মান ক্লাব। এরপরের মিনিটেই বোকা জুনিয়র্সকে সমতায় আনে মিগুয়েল সেরানো। ৮৪ মিনিটে মাইকেল ওলিসের গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বায়ার্ন মিউনিখ। এই জয়ে প্রথম দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে ব্যভারিয়ানরা। পাশাপাশি একটা রেকর্ডও গড়েছে বায়ার্ন। প্রথম ইউরোপিয়ান দল হিসেবে বোকা জুনিয়র্সকে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দিয়েছে তারা। এর আগে নয়বার ইউরোপিয়ানদের মুখোমুখি হয়ে ছয়বারই জয় পেয়েছে বোকা। ড্র করেছে তিনবার। কোনো পরাজয় ছিল না।
বায়ার্ন মিউনিখ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে একের পর এক ম্যাচে নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে। নিজেদেরকে অন্যতম ফেবারিট হিসেবেও প্রমাণ করেছে। হ্যারি কেইন তেমনটাই বললেন ম্যাচের পর মিক্সড জোনে এসে। তিনি বললেন, ‘সবাই আমাদেরকে ফেবারিট ভাবছে। আমাদেরও লক্ষ্য ট্রফি জিতে এখান থেকে ফিরে যাওয়া।’ কাজটা অবশ্য সহজ হবে না। ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর একক আধিপত্য অন্তত ক্লাব বিশ্বকাপে চোখে পড়ছে না। রিয়াল মাদ্রিদ এশিয়ান ক্লাবের সঙ্গে ড্র করেছে। পিএসজি ও চেলসির মতো দল হেরে গেছে ল্যাটিন শক্তির কাছে। শুক্রবার চেলসি ৩-১ গোলে হেরেছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লেমেঙ্গোর কাছে। পিএসজি ১-০ গোলে হেরেছে আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোটাফোগোর কাছে। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ইউরোপের ফুটবল!