জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েল ও রাশিয়াকে সতর্ক করে জানিয়েছেন। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে যৌন সহিংসতার অভিযোগে দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী আগামী বছরের প্রতিবেদনে ‘সন্দেহভাজন তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপিত সংঘাত-সংশ্লিষ্ট যৌন সহিংসতা বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘের ধারাবাহিক তদন্তে দুই দেশের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার ‘উদ্বেগজনক ধারা’ নথিভুক্ত হয়েছে।
ইসরায়েলের ক্ষেত্রে মহাসচিব উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌন সহিংসতা, যেমন— যৌনাঙ্গে নির্যাতন, দীর্ঘ সময় জোরপূর্বক নগ্ন রাখা, এবং বারবার অপমানজনক তল্লাশি চালানোর ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। তবে ইসরায়েল জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার না দেওয়ায় ‘সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন’ নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি ইসরায়েল সরকারকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা, তদন্ত, সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন এবং জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশের আহ্বান জানান।
এদিকে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে স্দে তেইমান কারাগারে এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে সামরিক প্রহরী কর্তৃক গণধর্ষণের অভিযোগে নয়জন ইসরায়েলি সেনাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছিল, নির্যাতনের পর ওই বন্দিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
রাশিয়ার ক্ষেত্রে গুতেরেস জানান, ইউক্রেন ও রাশিয়ার ৭২টি (৫০টি সরকারি ও ২২টি বেসরকারি) আটক কেন্দ্রে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের যৌনাঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা, পেটানো, পোড়ানো, জোরপূর্বক নগ্ন রাখা ইত্যাদি নির্যাতনের বহু ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। যা স্বীকারোক্তি আদায় বা অপমানের জন্য করা হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জাতিসংঘ দূতের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।
ইসরায়েলের জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত দানি দানোন অভিযোগগুলো ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, জাতিসংঘকে হামাসের যুদ্ধাপরাধ ও যৌন সহিংসতার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
এই প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক পরিসরে দুই দেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে।
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল