ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের হামলায় আরও ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, সাড়ে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রত্যাশীও রয়েছেন। এতে করে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় মোট নিহতের সংখ্যা সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও বিমান হামলায় ১২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৫ হাজার পেরিয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে ৫৭ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া, আহত হয়েছেন অন্তত ৩৬৩ জন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামের একটি বিতর্কিত সংস্থার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিতরণকেন্দ্রগুলো গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানেই বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ তুলেছে যে, ইসরায়েল গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এছাড়া, অভুক্ত মানুষদের ওপর গুলি চালিয়ে ও খাদ্য অবরোধ দিয়ে অনাহারে মারার কৌশল নিচ্ছে তারা।
এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও। ইসরায়েলি সংস্থা জিএইচএফের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণে অংশ নেবে না তারা। কারণ এতে ইসরায়েলি সামরিক সহায়তাপ্রাপ্ত বেসরকারি ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে, যা মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন।
এদিকে, জিএইচএফ প্রতিদিন একজনকে ১৭৫০ ক্যালরি খাদ্য সরবরাহের লক্ষ্য ঠিক করেছে, যা আন্তর্জাতিক জরুরি মানদণ্ডের চেয়েও অনেক কম।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ক্রিস নিউটন বলেন, ইসরায়েল এমন একটি সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং জনগণকে আরও দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে অনাহারে রাখার কৌশল হিসেবে কাজ করছে।
নিউটনের ভাষায়, এই পরিমাণ খাদ্য ১৯৪০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক অনাহার পরীক্ষায় ব্যবহৃত ক্যালরির কাছাকাছি। বরং ২০০৮ সালে ইসরায়েল নিজেই গাজার জন্য যে ন্যূনতম পুষ্টির সীমা নির্ধারণ করেছিল, তার চেয়েও কম।
বিডি প্রতিদিন/কেএ