বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে চিকিৎসা অবহেলার মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ পরিকল্পিত ভুল চিকিৎসা এবং ইচ্ছাকৃত চিকিৎসা অবহেলার কথা পরিষ্কারভাবে যুক্তরাজ্যের লন্ডন হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাদের ছাড়পত্রে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। তা ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে তৎকালীন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বক্তৃতা-বিবৃতিতে ঠাট্টা-পরিহাসের মাধ্যমেও বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ডা. জাহিদ হোসেন এ কথা জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটির বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো-
বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপি চেয়ারপারসন এবং বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যখন দুর্নীতির মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছিল-তখন তাঁর চিকিৎসাব্যবস্থা কেমন ছিল? অনেকেই বলেছেন- তাঁকে পরিকল্পিতভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে আপনি কী মনে করেন?
ডা. জাহিদ হোসেন : কারাগারে এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন-তখন তাঁকে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কোনোরকমের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তাঁকে ওষুধপত্র দেওয়া হয়েছে। যার ফলে তাঁর লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য জটিল রোগব্যাধিগুলো আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। এটাকে ভুল বলা ঠিক হবে না, বরং পরিকল্পিতভাবে ভুল চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে বলা যেতে পারে। অর্থাৎ পরিকল্পিতভাবে বিনা চিকিৎসায় তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলা যায়। এটি লন্ডন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাদের লিখিত নোটের মাধ্যমে এ পরিকল্পিত চিকিৎসা অবহেলার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। তা ছাড়া তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো একাধিকবার তার বক্তৃতায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু কামনা করেছেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার্থে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেননি। দল এবং পরিবারের থেকে আবেদন বারবার নাকচ করে দিয়েছেন। এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সমগ্র জাতির সামনে ঠাট্টা-উপহাস করেছেন। এতেই প্রমাণিত হয় যে- তারা পরিকল্পিতভাবেই চেয়েছিলেন বিনা চিকিৎসায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে। কিন্তু মহান আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে তিনি আজ অনেকটাই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : বর্তমানে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক অবস্থা কী? অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন?
ডা. জাহিদ হোসেন : দেশের সার্বিক অবস্থা বলতে- ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের পর মানুষ খুবই আশাবাদী ছিল এবং এখনো আছে। বিশেষ করে এ সরকারের অধীনে একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন-এটাই প্রত্যাশা। ১৯৯৬ সালের পর থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একটা প্রভিশন চালু হয়েছিল। কিন্তু সেটি প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের যোগসাজশে তার রায় জালিয়াতির মাধ্যমে বাতিল ঘোষণা করেন। যার ফলে দেশে একটি রাজনৈতিক কঠিন সংকটের সৃষ্টি হয়। এর মাধ্যমে তিনি দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিটা করেছেন। বিপরীতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন। ব্যক্তিস্বার্থেই তিনি দেশের বৃহত্তর স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছেন। এ দায় কিন্তু খায়রুল হক সাহেব এবং তার বেঞ্চে যারা ছিলেন- তারা সবাই দায়ী। এ দেশের শাসনতান্ত্রিক দেউলিয়াত্বের জন্য খায়রুল হক এবং তার সঙ্গে অন্য যারা নিজেদের বিবেক বিকিয়ে দিয়ে দেশের এত বড় ক্ষতি করেছেন তারা সবাই দায়ী। সমগ্র জাতির সামনে এসব বিচারকের মুখোশ উন্মোচন করে যথাযথ বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো বিচারক এ ধরনের হীন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে রায় দিতে না পারেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : সরকারের এক বছর পূর্ণ হলো। সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
ডা. জাহিদ হোসেন : অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন এখনো সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে সরকারি প্রশাসনে বিগত ১৭ বছরে সৃষ্ট জঞ্জাল এখনো নিরসন করা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া সেটা দূর করার জন্য যে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা- সেটা এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে বিভিন্নভাবে তারা তাদের সেই আগের মতোই দায়িত্ব পালন করছে। এখানে দায়বদ্ধতা কার কতটুকু সেটি নির্ধারণ করা উচিত।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন দেখছেন?
ডা. জাহিদ হোসেন : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। সরকারের এক বছর পূর্ণ হলেও এখনো পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো প্রো-পিপল মনোভাব নিয়ে কাজ শুরু কতে পারেনি। উদাহরণস্বরূপ- ক্যান্টনমেন্টের একজন সিটিং মেজর ১৬০ দিন ধরে অনুপস্থিত ছিলেন- কিন্তু তার কমান্ডিং অফিসার কী করেছেন- এটা সমগ্র জাতি জানতে চায়। বিভিন্ন জায়গায় ৪০০ থেকে ৫০০ সন্ত্রাসীকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে- এটি সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা, বিদ্রোহ এবং দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে পরিষ্কার ষড়যন্ত্র। এটাকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এর সঙ্গে আর কারা জড়িত- সবাইকে খুঁজে বের করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা উচিত। এ থেকেই বোঝা যায়- দেশের ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন এখন কোন পর্যায়ে আছে। এরপর গোপালগঞ্জে দেখেন- এনসিপি সারা বাংলাদেশে তাদের গণসংযোগ তথা সভা-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছে- এটা সবাই জানে। সেখানে তারা যাবে এটাও সবাই জানে। তারপরও কেন আগে থেকেই সেখানে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না এবং ঘটনার পর তাদের যেভাবে উদ্ধার করা হলো- সেটি যেন একটা যুদ্ধাবস্থার মতো ছিল। এগুলো কীসের আলামত? অথচ ঠিক পরের দিন শরীয়তপুর কিংবা রাজবাড়ীতে তারা (এনসিপি) প্রোগ্রাম করেছে সেখানে কিন্তু তাদের কোনো সমস্যা হলো না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি অর্থপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করতে চায়- তাহলে সেটা তারা করতে পারে। কিন্তু সেটি তারা করছে না। অনেক ঘটনার ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি রাজনীতিকে ঘোলাটে করার যে একটা প্রচেষ্টা- সেটি অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি সচিবালয় দখলের একটা প্রচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কারা কী উদ্দেশে করেছে সেটা প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিতভাবে খুনখারাবির ঘটনা ঘটিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপির ওপর দোষারোপ করা হচ্ছে। পরে দেখা যাচ্ছে যে, সেসব ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত নয়। কাজেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য কারা দায়ী সেটা তো না বোঝার আর অবকাশ নেই। তবে এ সরকারের কাছে মানুষ এ ধরনের অসহিষ্ণু আচরণ চায় না। মানুষ তাদের কাছে নিরপেক্ষ আচরণ চায়।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : মাঝেমধ্যেই শোনা যায়, ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন তথা আওয়ামী লীগের উত্থান ঘটতে চলেছে। তাদের ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত আছে বলে মনে করেন কি না?
ডা. জাহিদ হোসেন : ষড়যন্ত্র তো অব্যাহত আছেই। আমার প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো- কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেন আওয়ামী লীগ অফিস সিলগালা করা হয়নি? অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কেন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না? তারা কি চায় আবারও ওই ফ্যাসিস্ট ফিরে আসুক?
বাংলাদেশ প্রতিদিন : কতিপয় রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকটিকে মেনে নিতে পারেননি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে- বিএনপি যেন তাদের কাছে এক মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ কী বলে মনে করেন?
ডা. জাহিদ হোসেন : বিএনপির মতো একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডনের বৈঠককে সাধুবাদ জানাই। এ বৈঠকে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। যার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কেটে যায়। কিন্তু সেখানে দেখা গেছে যে- দু-একটি দলের নেতারা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন এবং কিছুটা গোস্সা করে বলেছেন যে, একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু তারা যে প্রায়ই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যমুনায় গিয়ে মিটিং করেন, তারপর প্রেসের সঙ্গে কথা বলেন, এরপর আবার প্রেস সচিবও ব্রিফিং করেন। তাতে কোনো দোষ হয় না। তখন কিন্তু তারা কেউ মন খারাপ করেন না। আসলে কতিপয় রাজনৈতিক দলে এখন ‘বিএনপি ফোবিয়া’ দেখা দিয়েছে। বিএনপির জনপ্রিয়তা তাদের কাছে যেন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটাকে কীভাবে নষ্ট করা যায় সেজন্য তারা একেবারে উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে আছে এবং থাকবে। বিএনপির আস্থা জনগণের ওপর এবং বাংলাদেশের জনগণেরও আস্থা বিএনপির ওপর ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও ইনশাল্লাহ থাকবে। কারণ বিএনপি সত্যিকারের একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আর এজন্যই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব সব গণতান্ত্রিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় পেলে ফ্যাসিস্টবিরোধী ও গণতন্ত্রমনা সব রাজনৈতিক দল নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার ঘোষণাও তিনি এরই মধ্যে দিয়েছেন। ফলে এটি এখন শুধু বিএনপির প্রস্তাব নয়, এ ৩১ দফা এখন দেশের সমগ্র গণতন্ত্রমনা মানুষের প্রস্তাব হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে- তার সব দিকনির্দেশনা এতে রয়েছে। এখন পর্যন্ত সংস্কার কমিশনে যত দল যত সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে- তার সবগুলোই ৩১ দফার ভিতরে রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : দেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা সরকারের সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়ে ওঠার কারণ কী?
ডা. জাহিদ হোসেন : বিগত বছরগুলোতে জনগণকে তাদের ভোটাধিকার তথা রায় প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেই এ ভয়ানক স্বৈরাচারের সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া গুম, খুন, হত্যা, সন্ত্রাস, মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন, লুটপাট, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদেশে পাচারের অবাধ ও উন্মুক্ত নীতি গ্রহণ করেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সংশয় আছে কি না?
ডা. জাহিদ হোসেন : আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এরই মধ্যে যে ঘোষণা দিয়েছেন- আমি আশা করি তিনি সেটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সরকারের ঘোষণা কীভাবে বাস্তবায়ন করবে বিএনপি।
ডা. জাহিদ হোসেন : এটা আমাদের ৩১ দফাতেই আছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যে অবস্থা দেশের সৃষ্টি করে গেছে, সেসব জঞ্জাল দেশ থেকে দূর করতে হলে সবাইকে নিয়েই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সেজন্যই আমাদের দল এ ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : জামায়াতে ইসলামীসহ ছোটখাটো কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করছে। এ ব্যাপারে আপনার এবং আপনার দলের অবস্থান কী?
ডা. জাহিদ হোসেন : এ বিষয়ে আমাদের দলের মহাসচিব পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারে এ সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ সাধারণ মানুষ জানতে পারবে না, সে কাকে তার মূল্যবান ভোটটা দিচ্ছে? তা ছাড়া নির্বাচনের পরও কোনো দাবিদাওয়া, সমস্যা কিংবা প্রয়োজনীয় কোনো কথা কারও কাছে বলতে পারবে না। অর্থাৎ তার ভোটে কোন ব্যক্তি প্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন সেটা ভোটার জানবে না। এমন পদ্ধতি বাংলাদেশের মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আগামী নির্বাচনে আপনার দল বিএনপি কোনো নির্বাচনি জোট গঠন কিংবা সমমনা দলগুলোর মাঝে কোনো আসন ছাড় দেবে কি না? দিলে কোন দলকে কত আসন ছাড় দেবে?
ডা. জাহিদ হোসেন : এ নিয়ে এখনো দলের ভিতরে চূড়ান্ত কোনো আলোচনা হয়নি। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক সময়ে দল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। এ নিয়ে এখনোই আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারেন?
ডা. জাহিদ হোসেন : যখন সঠিক সময় মনে করবেন এবং দেশের প্রয়োজনে ফিরে আসার প্রয়োজন উপলব্ধি করবেন তখনই তিনি দেশে ফিরবেন। তবে ইনশাল্লাহ সেটি খুব সহসাই হবে।