ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির পরও স্থবির রয়েছে কাশ্মীর। বাসিন্দারা এখনো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। যুদ্ধবিরতির পর এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি তারা। যুদ্ধের আতঙ্ক থেকে সাময়িক স্বস্তি মিললেও সামনে কী হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দুই দেশের মধ্যকার এ যুদ্ধবিরতি কতটা কার্যকর হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি নানা ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধের শঙ্কা এখনো কাটেনি বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি, জিও নিউজ, আল জাজিরা।গত ১০ মে সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়। এটি অনেকের কাছে ছিল স্বস্তির খবর। কিন্তু এই যুদ্ধবিরতি কত দিন স্থায়ী হবে, সে প্রশ্ন রয়েই গেছে। এদিকে আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন, গত রবিবার ব্রিটেনের পররাষ্ট্রসচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মার্কো রুবিও। সেখানে ভারত-পাকিস্তান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘কারও মাধ্যমে নয়, একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুক ভারত ও পাকিস্তান। এমনটাই চায় আমেরিকা।’ তবে এ নিয়ে ভারত এখনো কিছু বলেনি। তবে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল তিন বাহিনী প্রধানসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্মাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এদিকে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, পাকিস্তানে আবার কোনো আক্রমণ হলে পাল্টা জবাব হবে চূড়ান্ত ও নির্দয়। তিনি এতও দাবি করেন, ‘পাকিস্তান নয়, ভারতই যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘিত হলে তার দেশ প্রতিক্রিয়ায় কোনো ছাড় দেবে না, জবাব হবে ব্যাপক, কঠোর এবং চূড়ান্ত।’ পাকিস্তান বিমানবাহিনীর (পিএএফ) এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব আহমেদ এবং নৌবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব নেভাল স্টাফ (অপারেশনস) ভাইস অ্যাডমিরাল রাজা রব নেওয়াজকে সঙ্গে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই বার্তা দেন। যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী স্পষ্টভাবে জানান, ‘পাকিস্তান কখনোই যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেনি।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘৬ ও ৭ মে রাতের ওই কাপুরুষোচিত ও নৃশংস হামলার পর ভারত যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানায়। কিন্তু পাকিস্তান তখন জানিয়ে দেয়, আমরা উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে আবার কথা বলব। ১০ মে পাকিস্তান পাল্টা জবাব এবং প্রতিশোধ নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের আহ্বানে আমরা ভারতের করা অনুরোধে সাড়া দিয়েছি।’ আমাদের কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার কারণে বন্ধ থাকা দেশের ৩২টি বিমানবন্দর ফের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের এই বিমানবন্দরগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত শনিবার উভয় দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি সমঝোতা হওয়ার পর নতুন করে কোনো উত্তেজনা তৈরি না হওয়ার কারণে সোমবারই ভারত সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।