আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে কোনো মূল্যে ভালোভাবে করার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ডিসিদের নির্দেশনা (বার্তা) দেবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, এবার নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এ নির্বাচন না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। একটা উত্তম নির্বাচন করতে চাচ্ছি আমরা এবং যে কোনো মূল্যে এটি করতে হবে। এ মেসেজটি আমরা (ডিসিদের) দেওয়ার চেষ্টা করব।
তিন দিনের জেলা প্রশাসক-ডিসি সম্মেলন গতকাল শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে প্রথমবারের মতো এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিব ডিসি সম্মেলনে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যায় সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি অধিবেশন রাখা হয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ওখানে আমাদের বার্তা থাকবে- ইসির কাজ হলো নির্বাচন করা, আর নির্বাচনের পার্ট অ্যান্ড পার্সেল (অবিচ্ছেদ্য অংশ) হচ্ছে মাঠ প্রশাসন, জেলা প্রশাসকরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব (রিটার্নিং অফিসার) পালন করেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকে। মাঠ প্রশাসন যাতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা প্রতিপালন করে সে বিষয়ে কঠোর তাগিদ দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দলনিরপেক্ষ রিটার্নিং অফিসার বা ডিসি নিয়োগের বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে কোনো জেলায় নিরপেক্ষ জেলা প্রশাসককে পদায়ন প্রয়োজন, কমিশন কঠোরভাবে সে সিদ্ধান্তে অটল থাকবে।
নির্বাচন কমিশন নিজস্ব কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তুলে ধরে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনে কমিশন এ বিষয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাতে পারে। মাঠ প্রশাসন যেন কোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়েও নির্বাচন কমিশনের নজর রয়েছে। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, এ মাঠ প্রশাসনকে দিয়েই নির্বাচনগুলো হয়েছে। সুতরাং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রেসার থাকবে না; কোনো ধরনের প্রভাব থাকবে না।
তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী এবারও সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন হবে। এতে কেউ সাহস পাবে না (খারাপ কাজ করার), আমাদের সামনে ভালো উদাহরণও রয়েছে, খারাপ উদাহরণও রয়েছে। কমিশন বিশ্বাস করে, এবার কোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি হবে না এবং একটা উত্তম নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে হবে।
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে অনেক দল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। সময়ই বলবে আমরা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।
সীমানা নির্ধারণ আইনগত সংশোধনের উদ্যোগ থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আইন পরিবর্তনের জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়াটি একটা জটিল প্রক্রিয়া। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন সংশোধন হলে আমরা (সীমানা নির্ধারণে) ব্যবস্থা নেব। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার সুবিধা, উন্নয়ন কর্মকান্ড, জনসংখ্যার বিষয়, ভৌগোলিক অবস্থা, বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের সুবিধা-অসুবিধা দেখে তা করা হবে।