ঈদের ছুটি শেষ। কর্মস্থলে ফেরার পালা। তবে গত ঈদের তুলনায় এবার মহাসড়কের চিত্র ভিন্ন। একদিকে মহাসড়কে তীব্র যানজট, অন্যদিকে বাড়তি ভাড়া, পরিবহন সংকট ও তীব্র গরমে ট্রাকের ছাদে উঠে ভোগান্তি মাথায় নিয়েই ফিরতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গের মানুষদের ঢাকা-চিটাগাংসহ বিভিন্ন জেলার কর্মস্থলে।
শনিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যমুনা সেতু পশ্চিমপাড় থেকে নলকা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার মহাসড়কের এমন অবস্থা ছিল।
জানা যায়, যমুনা সেতু উপর এবং ঝাঐল ওভারব্রীরে কাছে বেশ কয়েকটি লক্কর-ঝক্কড় যানবাহন বিকল হয়ে যায়। এগুলো অপসারন করতে নিয়ে আসা রেকারগুলোও বিকল হয়ে যায়। এতে মহাসড়কেই ঢাকামুখী ও উত্তরগামীমুখী দুই লেনেই তীব্র যানজট শুরু হয়। এ যানজট চলতে থাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কখনো ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ীগুলোকে দাঁড়ি থাকতে হয়েছে। আবার কখনো কচ্ছপের গতিতে চলতে হয়েছে। এতে গাড়ীর ভিতরের এবং খোলা ট্রাকে থাকা যাত্রী বিশেষ করে বয়স্ক নারী-পুুরুষ এবং ছোট শিশুরা ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দেখা দেয় তীব্র পানীয় সংকট। দিনভর স্থানীয় বাসিন্দারা স্বেচ্ছাসেবী হয়ে যাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে বিনামুল্যে পানীয় শরবত পান করিয়েছেন।
বাস চালক ইব্রাহীম ও আকবর হোসেন জানান, গত বছরতো এমন হয়নি। এবার কেন হল? রাস্তা তো ভাল। তবে কারন হচ্ছে লক্কর-ঝক্কর গাড়ী মহাসড়কে নামানো হয়েছে। কারো গাড়ী বিকল হচ্ছে রং সাইড দিয়ে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এ কারনে তীব্র যানজট হচ্ছে। এসব বাস রাস্তায় নামতে না দিলে দ্রুতগতি সম্পন্ন বাসগুলো স্বল্পসময়ে গাড়ী গন্তব্য পৌছতে পারত। তাহলে যাত্রীদের দুর্ভোগ হতো না।
যাত্রী মোহাম্মদ আলী ও আনোয়ারা খাতুন জানান, একদিকে তীব্র যানজট অন্যদিকে ভয়াবহ গরমে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে সবাই। ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ীর ভিতরে গরমে সকলের বেহাল দশা। নেই পানির ব্যবস্থা। শিশুদের অবস্থা করুন। অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। খোলা আকাশে তীব্র রোদে ট্রাকের যাত্রীর অবস্থা আরো করুন। এবার সর্বোচ্চ ভোগান্তি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে।
অপেক্ষামান যাত্রী আহমেদ আলী জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকা ভাড়া সর্বোচ্চ ৫শত টাকা। সেখানে ১৫শ টাকা দিলেও নিচ্ছে না। চান্দুরার ভাড়া ১৫০ টাকা সেখানে ৫শ দিয়েও সিট পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে ৮ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেই গাড়ী পায়নি। এবার সকলকে ভোগান্তি নিয়ে এবার কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে।
যমুনা সেতু পুর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সেতুর উপর চারটি এবং পশ্চিম দিকে একটিসহ পাঁচটি গাড়ি বিকল হয়। লোড গাড়ি সরাতে গিয়ে সেতু ও পুলিশের তিনটি রেকার বিকল হয়ে যায়। এতেই যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশ যানযট নিরসনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম