কয়েকদিন থেকে রংপুর অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টিতে হাড়িভাঙ্গা আম চাষিদের স্বপ্ন হোঁচট খেতে শুরু করেছে। অনেক স্থানে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। বুধবার রাতে ৫১ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায় আম চাষিরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বিষয়টি পর্যব্ক্ষেণ করে আমচাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে এবার গাছে আমের মুকুল একটু দেরিতে এসেছে। ডিসেম্বরের শেষে জানুয়ারি প্রথম দিকে সাধারণত আমের মুকুল দেখা গেলেও এবার আমের মুকুল এসেছে ফেব্রুয়ারিতে। বর্তমানের আমের বয়স প্রায় দুইমাস। তবে প্রতিবছর আম জুনের মাঝামাঝি সময়ে গাছ থেকে পারা হলেও এবার তা কমপক্ষে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যাবে।
রংপুর জেলায় এবার আম আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আম ১ হাজার ৯০০ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে হাড়িভাঙ্গা প্রায় ১০/১২ মেট্রিকটন ফলন হয়। যার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি।
রংপুরে হাড়িভাঙ্গা ছাড়াও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বীনি, সাদা নেংড়া, কালা নেংড়া, কলিকাতা নেংড়া, মিশ্রী ভোগ, গোপাল ভোগ, আম্রপালি, সাদা রচি, চোচা, আঁটি জাতীয় আমের ফলন হয়। তবে হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হয়। এবার হাড়িভাঙ্গা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পনের হাজার মেট্রিক টনের ওপর। বৈরি আবহাওয়ায় কতটুকু আম ঘরে তুলতে পারবে তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে আম চাষিরা।
বদরগঞ্জের শ্যামপুরের আমচাষি শামছুজ্জামান শফিকুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, মিঠাপুকুরে শাহিনুর ইসলাম বকুলসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঝোড়ো হাওয়ায় আম বাগানের আম ঝরে পড়েছে। বজ্রবৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে তাদের সকলের স্¦প্ন ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমের খুব একটা ক্ষতি হবে না। কৃষি বিভাগ বিষয়টি মনিটরিং করে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, এবার মুকুল একটু দেরিতে এসেছে। তাই পরিপক্ক হতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ বেশি সময় লাগেেব।
রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাতে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৫১ কিলোমিটার।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল