ফরিদপুরে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা। আর এসব দুর্ঘটনায় গত এক বছরে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। সবর্শেষ গত ৭ জানুয়ারি ট্রেন-মাইক্রোবাসের দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, রাজবাড়ী-ফরিদপুর ও রাজবাড়ী ভায়া ভাটিয়াপাড়া রেলপথের অরক্ষিত রেলক্রসিং ও গেটম্যান না থাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে মোট ৯০ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। প্রতিদিন ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বেনাপোল, টুঙ্গিপাড়াসহ নিয়মিত চলাচল করছে বেশ কয়েকটি ট্রেন। এসব রেলপথের ফরিদপুর অংশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ১৫টি স্টেশন। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে রেলক্রসিংয়ের সংখ্যা ২৭টি। এরমধ্যে মাত্র পাঁচটি রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান থাকলেও ২২টি রেলক্রসিং রয়েছে অরক্ষিত। এছাড়া বেশ কয়েকটি রেলক্রসিং সম্পূর্ণ অরক্ষিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। এদের মধ্যে ফরিদপুর সদর উপজেলার অংশেই মৃত্যুর সংখ্যা বেশি রয়েছে। এছাড়া বোয়ালমারী ও ভাঙ্গা অংশে মৃত্যু হয়েছে বেশকিছু।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, জেলার ওপর দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা-ঢাকা ও বেনাপোল-ঢাকা ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, পোড়াদহ, রাজশাহী, খুলনা, টুঙ্গীপাড়া, ভাটিয়াপাড়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গা, গোয়ালন্দ ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা যায় ট্রেনে। ট্রেনে যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এসব রুটের যাত্রীদের সংখ্যা। কিন্তু সে তুলনায় এখনও রেলরুটে রয়ে গেছে অরক্ষিত রেলক্রসিং।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রেলক্রসিং অরক্ষিত থাকা, রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকার কারনেই মূলত দুর্ঘটনা বাড়ছে। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে দ্রুত গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানান তারা। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে রেল ক্রসিংয়ের কাছে অবৈধভাবে দোকান গড়ে উঠার কারনে অনেক সময় ট্রেন আসা-যাওয়া দেখতে পান না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান বলেন- ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করে এবং মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন কারণে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। গত ১ বছরে ২৫ জনের মতো মারা গেছে। এ নিয়ে ২১টি মামলা হয়েছে। তবে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে গত এক বছরে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
রেলওয়ের রাজবাড়ীর সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা অবৈধ রেলক্রসিং বন্ধে কাজ করছেন। যেসব স্থানে গেটম্যান নেই সেসব স্থানে গেটম্যান রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ