স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ঝিনাইদহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পরীক্ষা করার কিট নেই। এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকা রোগীদের কিটের অভাবে পরীক্ষা বা শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক রোগী ও স্বজনরা জেলা শহরে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ভোগান্তি-খরচ বেড়েছে। এদিকে শনিবার জেলার হরিণাকুণ্ডুতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় উপজেলাপর্যায়ে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট না থাকায় জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। জেলার ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে রোগীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ‘কয়েক দিন ধরে জ্বর। ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে এসেছিলাম। কিট না থাকায় পরীক্ষা করাতে পারিনি। চিকিৎসকরা উপসর্গের ওপর ভিত্তি করেই ওষুধ লিখে দিয়েছেন।’ শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, ‘জ্বর নিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী হাসপাতালে আসছেন। কিট না থাকায় তাদের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। যাদের গুরুতর মনে হচ্ছে, পরীক্ষার জন্য ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কিট চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত তা আসেনি।’
রবিবার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে, প্যাথলজির সামনে নানা বয়সের নারী-পুরুষ রোগীর উপচে পড়া ভিড়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েক রোগী জানান, চিকিৎসকরা দেখার পর তাদের ব্যবস্থাপত্রে ডেঙ্গুসহ বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন।
জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ছিল না। গত মাসে কিছু কিট কেনা হয়েছে। তবে তা রোগীদের চাহিদার তুলনায় খুবই স্বল্প। প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে আসছেন। আমরা উপসর্গ যাচাই-বাছাই করে রোগীদের ডেঙ্গু পরীক্ষা করাচ্ছি।’
সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়া ছয়টি উপজেলার একটিতেও ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট নেই। প্রতিটি উপজেলা থেকে কিট চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কিট সংকটের বিষয়ে আলাপ করা হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এ সংকটের সমাধান ঘটবে। এ ছাড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’