ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আবাসিক ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। জঙ্গলে ঢাকা পড়ে গোটা কলোনিতে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। দিনের আলোতেও গা ছমছম করে। মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থলে পরিণত হয়েছে এলাকাটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষাটের দশকে ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন ৩৫ একর জমিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস, আবাসিক ভবন, ক্লাব ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নামে স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। এরপর বেশ কয়েক বছর প্রতিষ্ঠানটি চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। বিশাল কলোনির পরিদর্শন বাংলোটি একটা সময় ছিল ভিআইপিদের ভরসার স্থল। নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবন সংস্কারের নামে রংচং করা হলেও পরিত্যক্ত পড়ে আছে বাকি ভবনগুলো। আবাসিক ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, একসময় দখলবাজরা ভবনগুলোতে বসবাস করত। তারা উচ্ছেদ হলেও কতিপয় কর্মচারীর কারণে এলাকাটি বর্তমানে মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সেখানে চলে অবৈধ কাজ আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এখন গোটা কলোনি জঙ্গলে ঢাকা পড়ে গেছে। কয়েকটি ভবনে এখান যারা বসবাস করেন তাদের ভাড়া দিতে হয় না। কেউ কেউ এসি ব্যবহার করে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যেক বছর মোটা অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভবনগুলো তথা ওই এলাকা পাহারা দিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এক প্লাটুন আনসার। সেখানে স্থাপন করা হয়েছে আনসার ক্যাম্পও। দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বেতন মাসে ৩ লাখ ২৪ হাজার টাকার বেশি; যা পরিশোধ করতে হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। অথচ তাদের দায়িত্ব পালন যেন শুধু খাতাকলমে। কর্মরত আনসার সদস্যরা বলেন, ‘জেলা কমান্ডের একটি চিঠির মাধ্যমে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডে দায়িত্ব পালন করছি। পিসি এপিসিসহ ২০ জন নিয়োজিত রয়েছি। নিরাপত্তা ও জনস্বার্থে দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু আমাদের দেওয়া হয়নি কোনো অস্ত্রশস্ত্র।’ ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘এটা ৬০ দশকের একটি পুরাতন প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখানে অনেকগুলো ভবন রয়েছে, যা বসবাসের উপযোগী। সেগুলো সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দ চেয়ে থাকি এবং কিছু কিছু ভবন মেরামতও করা হয়েছে। আর কিছু ভবন কমিটির পক্ষ থেকে কনডেম ঘোষণা করার কথা রয়েছে। স্টাফদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি কমিটি বলতে পারবে।’ তিনি জানান, আনসার সদস্যদের থাকা অফিসের সিদ্ধান্ত। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে থাকেন তারা। তবে মাদক আখড়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।