ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। মাত্র ৫ জন চিকিৎসক দিয়ে পুরো হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, যা রোগীদের তীব্র ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল ও অবকাঠামো উন্নয়নে তেমন অগ্রগতি হয়নি। এখনও ৩১ শয্যারও পূর্ণ জনবল নেই এই হাসপাতালে। বর্তমানে মাত্র ৫ জন চিকিৎসক দিয়ে আউটডোর, ইমার্জেন্সি ও অন্তঃবিভাগের সেবা চালানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা উন্নত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. রোকেয়া খাতুন দেড় বছর ধরে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত। এছাড়া এম্বুলেন্স থাকলেও চালক নেই বহুদিন ধরে।
আখাউড়ার ৫টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৩৫০ জন রোগী আউটডোর বিভাগে এবং ৭০-৮০ জন ইমার্জেন্সিতে সেবা নেন। অন্তঃবিভাগে প্রতিদিন ৪০-৪৫ জন রোগী ভর্তি থাকেন। ডাক্তার স্বল্পতার কারণে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে সেবা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতালে আসা ৬৫ বছরের তাহেরা খাতুন জানান, "এক ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, এখনও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। খুব কষ্ট হচ্ছে।" আরেক রোগী মারজিয়া বেগম বলেন, "১১ মাসের ছেলের জ্বর। দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। যদি ডাক্তার বেশি থাকতো তাহলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা পেতাম।"
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফর রহমান জানান, তিনি প্রতিদিন ১০০-১৫০ জন রোগী দেখেন। এতে চাপ বেড়ে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, "সীমিত জনবল দিয়েই সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চিকিৎসক নিয়োগে বিসিএস পরীক্ষা সামনে আছে, আশা করি শিগগিরই সংকট দূর হবে।"
বিডি প্রতিদিন/আশিক