বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল। এর আগে বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে এলডিসি থেকে উত্তরণ ২০২৬ সাল থেকে পিছিয়ে ২০৩২ সালে নির্ধারণের দাবি করে সরকারের কাছে সম্প্রতি চিঠি দেয় শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠনগুলো। ব্যবসায়ীদের এ উদ্বেগ জাতিসংঘকে জানিয়ে দেয় সরকার। একই সঙ্গে জাতিসংঘকে বিষয়টি নিয়ে স্বাধীন মূল্যায়নের অনুরোধ করা হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানানো হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ঢাকা সফরে আসছে। জানা গেছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর স্বাধীন পর্যালোচনা করতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য জাতিসংঘের হাই রিপ্রেজেনটেটিভের কার্যালয়ের পরিচালক রোনাল্ড মোলেরুসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চলতি মাসের শেষে ঢাকা সফর করার কথা রয়েছে। প্রতিনিধিদলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বেসরকারি খাত, নাগরিক সমাজ ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করবে। আলোচনার ভিত্তিতে প্রতিনিধিদল একটি স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরামর্শভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি করবে। ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকরা মনে করছেন, এলডিসি থেকে বের হলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হবে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। ওষুধশিল্পের ওপর মেধাস্বত্ব বিধিবিধান আরও কড়াকড়ি হবে। উত্তরণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ বড় বড় বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ১২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে।
ফলে রপ্তানি ৬ থেকে ১৪ শতাংশ কমে যেতে পারে। যার জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এখনো প্রস্তুত নন। ফলে সেই ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে আরও সময়ের প্রয়োজন। এজন্য এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ যেসব সমস্যায় পড়বে তা উল্লেখ করে ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন জাতিসংঘে পাঠানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করবে। তারা বেসরকারি খাতসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করবে।