অগ্নিসংযোগের তিন ঘণ্টা পরও ধোঁয়া বের হচ্ছিল ধ্বংস্তূপ থেকে। বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের চিহ্ন। হাঁস, মুরগি ও কবুতরের ঘরও রেহাই পায়নি। ভাঙচুর করা হয়েছে স্থানীয় বাজারের দোকান, বৈদ্যুতিক মিটার, এমনকি টয়লেটও। নারী, বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে আতঙ্কের ছাপ। পুরুষশূন্য বাড়িঘর। সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল চলছে। এ দৃশ্য গতকাল দেখা গেছে ভাঙ্গা উপজেলার খাঁ কান্দা নাজিরপুর গ্রামে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই গ্রামের দুই পক্ষের বিরোধে দুটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ১৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাতে ও গতকাল সকালে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয় মানিকদহ ইউপি চেয়ারম্যান কে এম শহিদুল্লাহ বাচ্চু বলেন, ইউনিয়নের দাঙ্গাপ্রবণ চার গ্রামের লোক আমাদের নির্দেশনা মানে না। আধিপত্যের বিরোধ তাদের লেগেই আছে। কয়েকজন মামলাবাজ ও দাঙ্গাবাজের কাছে জিম্মি ওই চার গ্রামের মানুষ। আমি বিভিন্ন সময় সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।
ভাঙ্গা থানার ওসি আশরাফ হোসেন বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী সহযোগিতা করছে। ডিবি পুলিশের টিমও কাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
জানা যায়, ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম দাঙ্গাপ্রবণ। এখানে প্রায়ই সংঘর্ষ ঘটে। পুখুরিয়া, ব্রাহ্মণকান্দা, নাজিরপুর ও খাঁ কান্দা নাজিরপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ রয়েছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন পুখুরিয়া গ্রামের সুলতান মাতুব্বর। অপরপক্ষের নেতৃত্বে আছেন ব্রাহ্মণকান্দার ইয়াকুব মিয়া। ১৫ দিন ধরে দুই পক্ষে উত্তেজনা বাড়ে। শনিবার রাত ১০টার দিকে ইয়াকুব মিয়ার পক্ষের শতাধিক লোক পুখুরিয়া রেলস্টেশন-সংলগ্ন হাজারি মার্কেটের ১২-১৩টি দোকান ভাঙচুর করে। এরপর দুই পক্ষ সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রবিবার ভোরে সুলতান মাতুব্বরের পক্ষের শত শত লোক দেশি অস্ত্রসহ খাঁ কান্দা ইয়াকুব মিয়ার সমর্থকদের বাড়িঘরে আক্রমণ করে।