গোপালগঞ্জে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দুটি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী কৃতকার্য হতে পারেননি।
২০২৫ সালের ঢাকা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি হলো, গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কবির হোসেন ডিগ্রি কলেজ ও সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ আইডিয়াল কমার্স কলেজ।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ওই দুটি কলেজ থেকে ১৬ জন শিক্ষার্থী ঢাকা বোর্ডের অধীনে নিবন্ধন করেন। চূড়ান্ত পরীক্ষায় ১২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ আইডিয়াল কমার্স কলেজ থেকে ১০ জন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কবির হোসেন ডিগ্রি কলেজ থেকে ২ জনের মধ্যে কেউই পাস করতে পারেননি।
মোবাইল ফোনে কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কবির হোসেন ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. নূরনবী ও বর্তমান অধ্যক্ষ শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সঙ্গে। তারা বলেন, এ বছর আমরা প্রথমে বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের কলেজে ২৩ জন (খণ্ডকালীন) শিক্ষক রয়েছেন। আমাদের কলেজটি এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়নি। এ বছর ছয়জন শিক্ষার্থীকে নিবন্ধন করিয়েছিলাম, এর মধ্যে দুজন পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউই সব বিষয় পাস করতে পারেনি। আগামী বছর আমাদের ৬০ জন শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় (এইচএসসি) পরীক্ষা দেবে। আশা করি, আগামী বছর ভালো ফলাফল আসবে।
এ ছাড়া জেলার চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (কলেজ) থেকে একজন করে পাস করেছেন। ওই চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো- গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর সপ্তদশ পল্লী কলেজ, রিজেন্ট কলেজ গোপালগঞ্জ, পল্লীমঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি অ্যান্ড কলেজ ও মুকসুদপুর উপজেলার এ কে এম সারোয়ারজান বিশ্বাস কলেজ। ওই চার প্রতিষ্ঠান থেকে ৯০ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
এর মধ্যে কৃষ্ণপুর সপ্তদশ পল্লী কলেজ থেকে ৩৯ জন, এ কে এম সারোয়ারজান বিশ্বাস কলেজ থেকে ২৭ জন, রিজেন্ট কলেজ থেকে ২০ জন ও পল্লীমঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি অ্যান্ড কলেজ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন।
এ কে এম সারোয়ারজান বিশ্বাস কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস মোবাইল ফোনে বলেন, বিগত বছর আমার কলেজ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা অংশগ্রহণ করে ১৫ জন কৃতকার্য হয়। এ বছর ২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এর মধ্যে ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। আমাদের ধারণা ছিল অন্তত ১৫ থেকে ১৮ জন শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করবে। আমরা সব শিক্ষকরা বসে এই বিষয়টাই ভাবতেছি। এমন ফলাফল কোনোভাবেই প্রত্যাশা ছিল না। আমাদের ধারণা, কোথাও কোনো সমস্যা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো ছিল। কিন্তু সবাই অকৃতকার্য হবে ভাবতেই পারছি না। এখন ফল পুনর্নিরীক্ষণে চ্যালেঞ্জ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, আমার কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল গোপালগঞ্জের সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের ৫০২ নম্বর কক্ষে। দুঃখের বিষয় হলো, ওই কক্ষে ৭৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। এর মধ্যে একজন বাদে কেউই পাস করতে পারেনি। আমাদের ধারণা, ওএমআর শিট বা হাজিরা খাতায় কোনো একটা ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তাহলে হয়তো শিক্ষার্থীদের ফলাফল ফিরে পেতে পারি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গোপালগঞ্জ জেলায় ৩৬টি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে চার হাজার ২১৭ জন পাস করেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২১৬ জন। অকৃতকার্য হয়েছেন ৫ হাজার ৯০৫ জন পরীক্ষার্থী। পাসের হার ৪১.৬৪ শতাংশ।
বিডি প্রতিদিনি/কেএইচটি