চারিদিকে রাশি রাশি হলুদ ফুল। তার মাঝ ধরেই গেছে আলপথ। এমন দৃশ্যে যে কারো চোখ আটকাবেই। আর সেই দৃশ্য উপভোগ করতে করতেই শীতের সকাল কিংবা বিকালে কারো মনে হতে পারে এক কাপ কফি কিংবা চায়ে চুমুক দেবেন। এবার সেই খায়েশই আয়েশ করে মেটানোর সুযোগ মিলছে নেত্রকোনায়।
সেখানে বিস্তৃত সরিষা ক্ষেতের মাঝে কফি হাউজ সাজিয়ে বসেছেন উদ্যোক্তা ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটার মিন্টু মিয়া। তিনি জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের পাবিয়া জুর গ্রামের বাসিন্দা।
এ বছরই প্রথম তার ভাইয়ের কাছ থেকে জায়গা নিয়ে সরকারিভাবে পাওয়া সরিষা বীজ কাজে লাগিয়ে সাফল্য পান। পরবর্তীতে মাথায় আসে হলুদ সর্ষের ভেতরে কফি পান করতে কেমন লাগবে? সেই ভাবনা থেকেই তিনি কাজে লেগে পড়েন। প্রথমদিকে মিন্টুর এই উদ্যোগ নিয়ে তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা সন্দিহান ছিলেন। একপর্যায়ে ফেসবুকে ছবিগুলো ছড়িয়ে গেলে মানুষ দেখতে এবং ছবি তুলতে সবাই মিন্টুর কফি হাউজে হাজির হন।
মিন্টু মিয়া জানান, তিনি দীর্ঘ ১২ বছর দুবাই এবং ব্যাঙ্গালোরে সুপার শপে কাজ করেছেন। বিদেশের জীবনযাত্রা এবং কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা তাকে কঠোর পরিশ্রম ও সৃজনশীল ভাবনার মূল্য শিখিয়েছে। যদিও করোনা মহামারির ধাক্কায় দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে শুরুতে মুদি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। কিন্তু নতুন কিছু করার তাগিদ থামতে দেয়নি তাকে। ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা থেকে বাড়ির পাশে ৬০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেন মিন্টু মিয়া। সেই জমির মাঝখানে ছাতা টানিয়ে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে একটি কফি হাউজ তৈরি করেন। প্রথমে ধারণাটি অনেকের কাছে অদ্ভুত এবং হাস্যকর মনে হয়েছিল। বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার চা কফি মিললেও ভবিষ্যতে আরো আইটেম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন মিন্টু মিয়ার।
তিনি জানান, দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটাতে আরও সৃজনশীল কিছু করতে নতুন উদ্যোগ নেবেন। সরিষা ক্ষেত ছাড়াও অন্যান্য মৌসুমি ফসল বা ফুলের বাগানে এ ধরনের কফি শপ তৈরি করার চিন্তাভাবনা করছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল