অ্যাপলের সেরা ম্যাকবুক
অ্যাপল দীর্ঘদিন ধরে ল্যাপটপ জগতে এক অনন্য ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত। তাদের ম্যাকবুক মানেই উন্নত প্রযুক্তি, দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স। আর তাদের পণ্যগুলোর প্রতিটিই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্য ও সেরা....
স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে পেশাদার করপোরেট চাকরিজীবী-সবার মধ্যে রয়েছে নতুন ‘ল্যাপটপ’ বা ‘ম্যাকবুক’ কেনার চাহিদা। সে ধারাবাহিকতায় অ্যাপলের ম্যাকবুক বেশ জনপ্রিয়। আর হবেই না কেন! অ্যাপল দীর্ঘদিন ধরে ল্যাপটপ জগতে এক অনন্য ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত। তাদের ম্যাকবুক লাইনআপ মানেই হলো উন্নত প্রযুক্তি, দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অ্যাপল একাধিক ম্যাকবুক বাজারে এনেছে, যেগুলোর প্রতিটিই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সেরা। চলুন জেনে নিই অ্যাপলের সেরা ম্যাকবুকগুলো সম্পর্কে-কোন মডেল সবচেয়ে উপযোগী।
ম্যাকবুক প্রো (এম৩ ম্যাক্স, ২০২৩) :
সবার সেরা পারফরমার
যারা পেশাদার কাজ, যেমন- ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কোডিং বা অন্যান্য রিসোর্স-ইনটেনসিভ কাজ করার জন্য শক্তিশালী ল্যাপটপ চান, তাদের জন্য ম্যাকবুক প্রো সেরা বিকল্প। এতে রয়েছে ১৬-কোর সিপিইউ, ৪০-কোর জিপিইউ এবং ১২৮ জিবি পর্যন্ত ইউনিফায়েড মেমোরি সাপোর্ট, যা একে করে তুলেছে হেভি গ্রাফিক্স, থ্রিডি রেন্ডারিং, ভিডিও এডিটিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) সম্পর্কিত কাজের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া ১৬.২ ইঞ্চির লিক্যুইড রেটিনা এক্সডিআর ডিসপ্লে এবং প্রায় ২২ ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ একে দিয়েছে অসাধারণ ভারসাম্য। পেশাদার নির্মাতা, সফটওয়্যার ডেভেলপার ও ডিজাইনারদের জন্য এটি সেরা পছন্দ।
ম্যাকবুক প্রো (এম৩ প্রো, ২০২৩) :
ভারসাম্যের প্রতীক
যারা উচ্চমানের কাজ করেন, কিন্তু এম৩ ম্যাক্স-এর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োজন নেই, তাদের জন্য এমথ্রি প্রো একটি আদর্শ পছন্দ। এটি ১২-কোর সিপিইউ এবং ১৮-কোর জিপিইউ-সহ পারফরম্যান্স ও ব্যাটারির দারুণ সমন্বয় সাধন করে। ভিডিও এডিটিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কিংবা মাল্টিটাস্কিং- সবকিছুতেই এটি দুর্দান্ত কাজ করে। বিশেষ করে ১৪-ইঞ্চির মডেলটি যারা কমপ্যাক্ট ফর্মে পাওয়ার চান, তাদের কাছে জনপ্রিয়।
ম্যাকবুক এয়ার (এম৩ চিপ) :
দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ
অ্যাপলের নিজস্ব এম৩ চিপের কারণে এটি অসাধারণ পারফর্ম করে এবং খুব কম শক্তি খরচ করে। এটি খুবই পাতলা (১১.৩ মিমি) এবং হালকা (১.২৪ কেজি), যা এটিকে বহন করা খুব সহজ করে তোলে। ১৩.৬ ইঞ্চি লিক্যুইড রেটিনা ডিসপ্লে উজ্জ্বল এবং স্পষ্ট ছবি প্রদান করে। তা ছাড়া এম৩ চিপ এটিকে দৈনন্দিন কাজ, যেমন-ব্রাউজিং, ডকুমেন্ট তৈরি, এবং হালকা ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী করে তোলে। একবার চার্জে এটি ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে পারে, যা দীর্ঘ সময় কাজ করার জন্য আদর্শ।
ম্যাকবুক এয়ার (এম২, ২০২২) :
হালকা, কিন্তু দক্ষ
যারা হালকা, পাতলা এবং দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফের ল্যাপটপ চান, তাদের জন্য ম্যাকবুক এয়ার একটি চমৎকার বিকল্প। এম২ চিপসহ ম্যাকবুক এয়ার নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী, লেখক এবং সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পারফেক্ট। মাত্র ১.২৪ কেজির পাতলা বডি, দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ (১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত), এবং উন্নত রেটিনা ডিসপ্লে-সব মিলিয়ে এটি পোর্টেবিলিটির সেরা উদাহরণ। এতে ফ্যানলেস ডিজাইন থাকায় এটি নিঃশব্দে কাজ করে, যা লেখক, স্টুডেন্ট এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাছে বিশেষ প্রিয়।
ম্যাকবুক এয়ার (এম৩, ২০২৪) :
আধুনিকতা ও গতির মিলন
ম্যাকবুক এয়ার-এর এম৩ ভার্সনটি ২০২৪ সালে এসে আরও উন্নত পারফরম্যান্স ও এনার্জি এফিশিয়েন্সি নিয়ে হাজির হয়েছে। এটি ১৩ ও ১৫ ইঞ্চি দুইটি সাইজে পাওয়া যায়, এবং এর ডিসপ্লে আগের চেয়ে আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। এমথ্রি চিপ আরও দ্রুত অ্যাপ লোডিং, উন্নত মাল্টিটাস্কিং এবং উন্নত জিপিইউ পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। বিশেষ করে যারা মোবাইল ও হালকা প্রফেশনাল কাজ করেন, তাদের জন্য এটি চমৎকার অপশন।
ম্যাকবুক প্রো (১৪ ইঞ্চি, এম২ প্রো, ২০২৩) :
ব্যালান্সড প্রো পছন্দ
ম্যাকবুক প্রো-এর ১৪ ইঞ্চির এই সংস্করণটি এমন ব্যবহারকারীদের জন্য, যারা একটু কম সাইজে প্রো-পারফরম্যান্স চান। এতে রয়েছে লিক্যুইড রেটিনা এক্সপিআর ডিসপ্লে, উন্নত থার্মাল কুলিং এবং স্পিকার সিস্টেম যা ভিডিও এডিটিং কিংবা সাউন্ড ডিজাইনের জন্য আদর্শ। ব্যাটারিও চলে দীর্ঘ সময়, এবং থান্ডারবোল্ড ৪, এইচডিএমআই ও এসডি কার্ড রিডার থাকায় এটিকে আরো বেশি ফিচার-রিচ বানিয়েছে।
ম্যাকবুক এয়ার (এম১, ২০২০) :
বাজেটের রাজা
যদিও এটি আগের প্রজন্মের ডিভাইস, তবে এখনো যারা স্বল্প বাজেটে একটি নির্ভরযোগ্য ম্যাকবুক চান, তাদের জন্য এম১ এয়ার দারুণ। এটি এখনো ম্যাকওএস-এর সব আপডেট সাপোর্ট করে এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য যথেষ্ট দ্রুত। স্টুডেন্টদের কাছে এটি এখনো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ম্যাকবুক।
তথ্যসূত্র : দ্য ভার্জ