কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশে বাড়ছে ডেটা সেন্টারের চাহিদা। এসব তথ্যভান্ডার (ডেটা সেন্টার) স্থাপনে বিশাল জমি ও বিপুল বিদ্যুৎ লাগে যা থেকে প্রচুর কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গত হয়।
গোল্ডম্যান স্যাকসের তথ্যমতে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টারের বিদ্যুৎ ব্যবহার প্রায় ১৬৫ শতাংশ বেড়ে যাবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের চেষ্টা থাকলেও সৌর ও বায়ুশক্তির জন্যও প্রচুর জায়গা প্রয়োজন। ফলে কিছু কোম্পানি এখন ডেটা সেন্টার মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।
মহাকাশে অবিরাম সূর্যালোক পাওয়া যায়। সেখানে নেই রাত, মেঘ বা ঋতু পরিবর্তনের বাধা। ইউরোপীয় কমিশনের অর্থায়নে ASCEND নামের প্রকল্পটি মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টারের সম্ভাবনা যাচাই করছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ফ্রান্সের থেলেস আলেনিয়া স্পেস। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা জেভিয়ার রোসার বলেন, মহাকাশে ডেটা সেন্টার পাঠানো গেলে তা হতে পারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই সমাধান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাদারি স্পেস কোম্পানি ২০২৬ সালে টোস্টার মেশিনের আকারের একটি ডেটা সিস্টেম কক্ষপথে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী শরিফ আল রোমাইথি জানিয়েছেন, মহাকাশে তথ্য প্রক্রিয়া করা গেলে বিশ্লেষণের সময় অনেক কমবে।
অন্যদিকে, চীন ইতিমধ্যে ১২টি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে যা ভবিষ্যতে প্রায় ২,৮০০ স্যাটেলাইটের ডেটা নেটওয়ার্কে পরিণত হবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, মহাকাশে ডেটা সেন্টার গড়া এখনও ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কোয়েন্টিন পার্কার বলেন, পৃথিবীতে সাশ্রয়ী সমাধান এখনো সম্ভব।
তিনি সতর্ক করেন, মহাকাশে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ, মহাকাশের আবর্জনা ও সৌরঝড়ের মতো ঝুঁকি রয়েছে।
তবুও সমর্থকদের আশা, ভবিষ্যতে শক্তি সংকট ও দূষণ রোধে মহাকাশভিত্তিক ডেটা সেন্টার বড় ভূমিকা রাখতে পারে। রোমাইথির ভাষায়, এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতেই হবে, না হলে প্রযুক্তির অগ্রগতি থেমে যাবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল