২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। জুলাই গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বাজেটে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের প্রত্যয় আশানুরূপভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলে বাজেটের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আগের বাজেটগুলোর ন্যায় এটি একটি গতানুগতিক বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের মোটা দাগে খুব একটা তফাত পরিলক্ষিত হয়নি। এবার বাজেটে ব্যয় না বাড়লেও তেমন কোনো ব্যয় কমেওনি, এতে কোনো নতুনত্বের ছোঁয়াও পরিলক্ষিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এই বাজেটে বড় অঙ্কের ব্যয় মেটাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরেও এর কাছাকাছি অর্জন করা সম্ভব হয়নি। যা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে আমরা মনে করছি। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বলেন, বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেট বাড়িয়ে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার একটি বড় অংশ আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে। বাজেটে বিদেশ নির্ভরতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ টি এম মা’ছুম বলেন, স্থানীয় শিল্পের কর অবকাশ ও ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা সংকুচিত করা হয়েছে। এতে দেশীয় পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। পাশাপাশি এসি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন এবং এলইডির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তার খরচ বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে সুতার আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করায় আরএমজি সেক্টরে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। ফলে তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, এত বড় বাজেটে শিক্ষা সামগ্রীর দাম কমালেও শিক্ষা খাতে মোট বাজেট কমানো হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে উপকরণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার-কীটনাশকসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কমানো হয়েছে যা আশাব্যঞ্জক। এ ছাড়াও কোল্ড স্টোরেজ খরচ কমানোর কারণে কৃষকদের জন্য কিছুটা স্বস্তির কারণ হবে। তিনি আরও বলেন, বাজেটে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে তা আরও বরাদ্দের দাবি রাখে। এক্ষেত্রে সুচিকিৎসা অগ্রাধিকার পাওয়া প্রয়োজন। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ এবং অন্যান্য অবৈধ অর্থ উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা বাজেটে লক্ষ করা যায়নি, যা জাতিকে হতাশ করবে। এ ছাড়াও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।