প্রশ্ন : কর্মব্যস্ত জীবন সহজ করে তুলতে রেফ্রিজারেটরের ভূমিকা কী?
উত্তর : প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহর সবাই এখন ব্যস্ত থাকে। এ ব্যস্ততার মধ্যে ফ্রিজের কারণে বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করতে পারছি। সপ্তাহে বা মাসে একদিন বাজার করলেই তা ফ্রিজে রেখে সুবিধামতো আমরা খেতে পারি।
প্রশ্ন : বর্তমানে দেশে ফ্রিজের বাজার কেমন যাচ্ছে? বিদেশে বাংলাদেশি ফ্রিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : প্রতি বছর দেশে ফ্রিজের বাজার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন শহর ও গ্রামাঞ্চলে ছোট ফ্রিজের কারণে ক্রেতাদের ফ্রিজ কেনার পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কনকার সঙ্গে যৌথভাবে দেশের চাহিদার বিষয়টি দেখে ও পরিবেশের সঙ্গে উপযোগী করে ফ্রিজ উৎপাদন করছি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার থেকে নীতিসহায়তা পেলে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদি করা হলে সেই সঙ্গে যদি রপ্তানির জন্য নীতিমালা তৈরি করা হয় তাহলে আমাদের দেশে উৎপাদিত ফ্রিজেরও পোশাক খাতের মতো বিকাশের সুযোগ আছে। এভাবে সুযোগসুবিধা নিশ্চিত করা হলে পুরোনো বিনিয়োগকারীরাও তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে যেতে পারবেন। এতে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। আমরা চাই, দেশের সব ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, স্টেকহোল্ডার, বিশেষজ্ঞ মহল এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহল সবাইকে নিয়ে একটি সম্মেলন হোক। এতে সবাই যার যার অভিমত প্রকাশ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে আমরা হয়তো নতুন পথনির্দেশনা পেতে পারি। যে সরকারই আসুক না কেন আমরা নিয়মিত এ খাতে নীতিসহায়তা চাই। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আমরা অল্প সময়ের মধ্যে ফ্রিজ রপ্তানির জন্য প্রস্তুত।
প্রশ্ন : গরমে রেফ্রিজারেটরের বিক্রি বেশি হয়। সামনেই ঈদুল আজহা। এ সময় নতুন কী কী প্রযুক্তির ফ্রিজ এনেছেন?
উত্তর : গরম ও কোরবানির ঈদে ফ্রিজের বিক্রি বেশি হয়। ঈদুল ফিতর ও কোরবানির সময় আমাদের বছরে মোট ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ফ্রিজ বিক্রি হয়। আমাদের ফ্রিজে ইনভার্টার ও গার্ডেন ফ্রেশ টেকনোলজি ব্যবহৃত হয়। গার্ডেন ফ্রেশ টেকনোলজির কারণে বাগানের খাবারের মতোই আমাদের ফ্রিজে খাবার ৭ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকবে। এছাড়া অ্যাকটিভ কার্বন প্রযুক্তির কারণে এক খাবারের গন্ধ অন্য খাবারে যেতে পারে না। দেশে আমরাই প্রথম এ প্রযুক্তি ব্যবহার করি। ইনভার্টার প্রযুক্তির মাধ্যমে টাচ স্ক্রিন ব্যবহার করে বাইরে থেকেই ফ্রিজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এছাড়া সুপার কুল মুড ডিপ ফ্রিজে ব্যবহারের ফলে ফ্রিজে রাখা কাঁচা মাছ মাংস সবই একসঙ্গে শীতল হবে। এতে খাবার নষ্টের শঙ্কা থাকবে না। আবার ডিপ ফ্রিজ নরমাল মুডে এনে সাধারণ শাকসবজিও রাখার ব্যবস্থাও আছে।
প্রশ্ন : গরম ও ঈদ উপলক্ষে বিশেষ কোনো অফার আছে কি না?
উত্তর : ঈদের সময় এবার পণ্য ক্রয়ে আমাদের স্ক্র্যাচ কার্ড ঘষা দিলেই সোনার অলংকারসহ অন্যান্য পণ্য বিনামূল্যে পাওয়ার অফার আছে। এর পাশাপাশি ক্রেতা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে পণ্য কিনতে পারেন এজন্য ইএমআই কার্ডের মাধ্যমে পণ্য কেনার সুযোগ আছে। এতে ১৮ মাসের কিস্তিতে ক্রেতারা পণ্যের দাম পরিশোধের সুযোগ পাবেন। এছাড়া ইলেক্ট্রো মার্টেও নিজস্ব ১২ মাসের কিস্তি সুবিধা আছে।
প্রশ্ন : ক্রেতারা ফ্রিজ যাতে দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারেন এজন্য পরামর্শ কী?
উত্তর : আমাদের উৎপাদিত ফ্রিজে ১০ বছরের ওয়ারেন্টি থাকে। আর ফ্রিজ উৎপাদনে আমরা যেসব পণ্য ব্যবহার করি তা ভার্জিন ম্যাটেরিয়াল। আমেরিকান এফডিআইর সার্টিফাইড ফুড গ্রেড ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করি। যাতে খাবার নষ্ট না হয়। ব্যবহারকারীরা ফ্রিজ যখন চালাবেন তারা যেন মাসে একবার ফ্রিজ পরিষ্কার করেন। দেশে লোডশেডিং বেশি হয়। এজন্য ফ্রিজে ফিউজ ব্যবহার করা হয়, যাতে কখনো বিদ্যুৎবিভ্রাট থেকে শর্ট সার্কিট না হয়। এতে ফ্রিজের কমপ্রেসার নষ্ট হবে না। এছাড়া সারা দেশে আমাদের সাড়ে চার হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান আছেন। গ্রাহকরা যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের হটলাইনে ফোন দিয়ে তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। ক্রেতাদের বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব পণ্য ক্রয়ে জোর দেওয়া উচিত।
প্রশ্ন : এত ব্র্যান্ডের ফ্রিজের ভিড়ে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আপনারা কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন?
উত্তর : আমরা এমনভাবে আমাদের ফ্রিজ উৎপাদন করি যাতে দামে এটি ক্রেতার কাছে সাশ্রয়ী হয় এবং ক্রেতার চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়। আমাদের ফ্রিজে ডোর অ্যালার্ম সিস্টেম আছে যা একেবারেই ব্যতিক্রমী। এতে কেউ ফ্রিজের দরজা বন্ধ করতে ভুলে গেলেও এক মিনিট পরেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে। এসব বৈশিষ্ট্য অন্যদের চেয়ে আমাদের এগিয়ে রেখেছে। ভবিষ্যতে আমরা এআই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছি।