প্রশ্ন : ঈদুল আজহা উপলক্ষে আপনারা ক্রেতাদের জন্য কী ধরনের নতুন পণ্য নিয়ে এসেছেন?
উত্তর : ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য আমরা সম্প্রতি আইওটি, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিশ্বের সর্বাধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ও ফিচারসমৃদ্ধ সাতটি নতুন মডেলের ফ্রিজ উন্মোচন করেছি। নতুন মডেলের এসব ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে এইট-ইন-ওয়ান (8-in-1) কনভার্টিবল মোডের ডলবি সাউন্ডযুক্ত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং ২১.৫ ইঞ্চি ডিসপ্লের স্মার্ট রেফ্রিজারেটর, আইওটি ও এআই ডক্টরসহ সর্বাধুনিক ফিচারের থ্রি-ডোরের সাইড বাই সাইড মডেলের স্মার্ট রেফ্রিজারেটর, ইনভার্টার টেকনোলজির কনভার্টিবল মোডসমৃদ্ধ রিভার্সিবল ডোর মডেল, ওয়াটার ডিসপেনসারের বটম ও মাউন্টেড মডেল, ডিজিটাল কন্ট্রোল ডিসপ্লের সেমি নো-ফ্রস্ট মডেলের রেফ্রিজারেটরসহ স্লিম ডিজাইনের ফ্রিজার। এর মাধ্যমে হাই-টেক রেফ্রিজারেটর উৎপাদন ও বিপণনে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে ওয়ালটন। এআইযুক্ত হাই-টেক ফ্রিজ উৎপাদনে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে ওয়ালটন।
প্রশ্ন : ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসা ওয়ালটনের নতুন মডেলের ফ্রিজের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ফিচার ও সুবিধা সম্পর্কে বলুন।
উত্তর : ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসা ওয়ালটনের নতুন মডেলের ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে ৬২০ লিটার ধারণক্ষমতার ‘মাল্টিমিডিয়া হাব’ স্মার্ট রেফ্রিজারেটর। এতে রয়েছে খুবই উন্নত ভিউ অ্যাঙ্গেলের ২১.৫ ইঞ্চি অ্যান্ড্রয়েড ডিসপ্লে এবং স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম। এতে গ্রাহকেরা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ফোনের ফিচারসহ ইউটিউব ব্রাউজিং, অনলাইন গ্রোসারি শপিং, অফলাইন ভিডিও ও অডিও, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, সেলফি ক্যামেরা, ওয়েদার আপডেট ইত্যাদি মাল্টিমিডিয়ার সব ফাংশন পাবেন। ওয়ালটনের নতুন মডেলের এ ফ্রিজে রয়েছে মেটাল ও ডুয়ো কুলিং সেটিংস। এ ফ্রিজে ব্যবহৃত এমএসও (ম্যাট্রিকস স্পিড অপটিমাইজেশন) প্লাস ইনভার্টার টেকনোলজি বাইরের তাপমাত্রা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ খরচে ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ সর্বোচ্চ কুলিং পারফরম্যান্স নিশ্চিত করবে। 8-in-1 কনভার্টিবল মোডের এ ফ্রিজের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টের কুলিং পারফরম্যান্স গ্রাহক তার পছন্দমতো সেট করতে পারবেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ হবে অনেক কম। এসব ফ্রিজ নিশ্চিত করবে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত স্বাস্থ্যকর ফ্রেশ খাবার। ওয়ালটনের নতুন মডেলের ৫৬০ লিটার ধারণক্ষমতার থ্রি-ডোর স্মার্ট রেফ্রিজারেটরে ব্যবহার করা হয়েছে এমএসও ইনভার্টার টেকনোলজি, ডুয়াল টেম্পারেচার কন্ট্রোলসহ হলিডে, টারবো ও সুপার মোড কুলিং সেটিংস। এসব ফ্রিজে সংযোজন করা রয়েছে নিজস্ব উদ্ভাবিত ‘এআই ডক্টর’ ফিচার। বাংলাদেশে ওয়ালটনই প্রথম আইওটি স্মার্ট ফ্রিজে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ফিচার সংযোজন করেছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট এ ফিচার গ্রাহকের বাসায় ব্যবহৃত ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজের কুলিং পারফরম্যান্স, সেন্সরসহ অন্যান্য কম্পোনেন্টসে কোনো সমস্যা হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে তৎক্ষণাৎ নিজেই সমাধানের চেষ্টা করবে। নতুন মডেলের ফ্রিজগুলোতে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে আলোকরশ্মি সংরক্ষিত ফলমূল ও শাকসবজি প্রকৃতির মতো সজীব রাখে। ইন্টেলিজেন্ট জার্ম টার্মিনেটর টেকনোলজি বায়ুবাহিত জীবাণু ধ্বংস করে। থ্রি-লেয়ার ওডোর সেফ গার্ড অনাকাঙ্ক্ষিত গন্ধ দূর করে খাবারের স্বাদ রাখে অটুট। স্মার্ট কন্ট্রোল ফিচার থাকায় ওপরের দরজায় হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই ফ্রিজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর জন্য ফ্রিজের দরজা খোলার প্রয়োজন পড়ে না।
প্রশ্ন : ফ্রিজের বাজারে ওয়ালটন ফ্রিজ শীর্ষস্থানীয়। এ অবস্থান ধরে রাখার পেছনের কারণগুলো কী?
উত্তর : সব শ্রেণি-পেশার গ্রাহকের পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজারজাত করছি আমরা। দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ওয়ালটন রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন টিমের প্রকৌশলীদের মাধ্যমে ওয়ালটন ফ্রিজে সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি ও ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। ওয়ালটন ফ্রিজ যেমন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, তেমন দামেও সাশ্রয়ী। ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ওয়ালটন ফ্রিজ। পাশাপাশি রয়েছে আইএসও সনদপ্রাপ্ত দেশব্যাপী বিস্তৃত সর্ববৃহৎ সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা। মূলত এসব কারণেই দেশের রেফ্রিজারেটর বাজারের সিংহভাগ ক্রেতার আস্থা অর্জন করে সুপারব্র্যান্ড হয়েছে ওয়ালটন ফ্রিজ।
প্রশ্ন : দেশের রেফ্রিজারেটর বাজারে সুপারব্র্যান্ডের তকমা ধরে রাখতে সামনের দিনগুলোতে আপনারা কোন জায়গায় বিশেষ জোর দিচ্ছেন?
উত্তর : দেশি রেফ্রিজারেটর বাজারে শীর্ষস্থান বজায় রাখতে রেফ্রিজারেটর খাতের অটোমেশন, পণ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে অধিক জোর দিয়েছি আমরা। পাশাপাশি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিত্যনতুন প্রযুক্তি ও ফিচারের পণ্য উদ্ভাবনের লক্ষ্যে গবেষণা ও উদ্ভাবনেও প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
প্রশ্ন : ওয়ালটন ফ্রিজ রপ্তানি হচ্ছে কোন কোন দেশে? রপ্তানির পরিমাণ কত? রপ্তানি নিয়ে আগামী দিনে ওয়ালটনের পরিকল্পনা কী?
উত্তর : ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, ইরাক, ইয়েমেন, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, অস্ট্রিয়াসহ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপের ৪০টির বেশি দেশে রেফ্রিজারেটরসহ ফ্রিজের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ রপ্তানি করছে ওয়ালটন। গত অর্থবছরে প্রায় ২ লাখ ইউনিট ফ্রিজ রপ্তানি করেছি আমরা। ২০২৬ সালের মধ্যে ৫ লাখ ইউনিট ফ্রিজ রপ্তানির টার্গেট রয়েছে আমাদের। সেজন্য ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত বিশ্বের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছি আমরা। গঠন করেছি সুদক্ষ এবং চৌকশ গ্লোবাল বিজনেস টিম। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার। সেখানে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের উদ্ভাবনী পণ্যের পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকার স্ট্যান্ডার্ড, আবহাওয়া এবং ক্রেতাদের চাহিদা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালানো হচ্ছে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ইলেকট্রনিকস পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় বড় মেলাতেও অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন।