বয়সের ভারে চলাচলে অক্ষম। নিজেরা ঠিকমতো খেতে পারেন না। রক্তের সম্পর্কের কোনো স্বজনের নেই কোনো খোঁজ। পথে পড়ে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধী সেই সব বৃদ্ধা-বৃদ্ধর দায়িত্ব নিয়েছেন কয়েকজন মাদরাসাছাত্র। তাদের নিয়ে ভাড়া বাসায় গড়ে তুলেছেন ‘আদর্শ নিবাস বৃদ্ধাশ্রম’। বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠ সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী বাজার সংলগ্ন আজাদ তালুকদারের ভাড়া বাসায় ওই বৃদ্ধাশ্রমটি পরিচালনা করা হচ্ছে। বৃদ্ধাশ্রমের সেবিকা ফাতেমা জান্নাত বলেন, ২০২১ সালে মাদরাসার কয়েকজন ছাত্র করোনার সময় খাবার বিতরণ করতে গিয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী ওইসব মানুষকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। তাদের নিয়ে প্রথমে নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় শুরু করা হয় বৃদ্ধাশ্রমটি। পরে নগরীর ভাটিখানা এলাকায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে এখন চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী বাজার এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ১১ জন মানসিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন। এর মধ্যে দুজন বৃদ্ধ ও নয়জন বৃদ্ধা। এখানে যাদের রাখা হয়েছে, তাদের কেউ নেই। সবাই অজ্ঞাত ও মানসিক প্রতিবন্ধী। মাদরাসা ছাত্র ও বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তির সহায়তায় চলে বৃদ্ধাশ্রমটি। এ ছাড়াও সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ সব সময় সহায়তা করেন। বর্তমানে সাড়ে ৬ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে বাসায় বৃদ্ধাশ্রমটি পরিচালনা করা হয়েছে। প্রতি মাসে বৃদ্ধাশ্রমটি পরিচালনায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এখানের বাসিন্দাদের সকালে নাশতা, দুপুরে ও রাতে মাংস, মাছ ও সবজি দিয়ে ভাত দেওয়া হয়। ভাড়া বাসায় এটা পরিচালনা করা যায় না। একটা স্থায়ী নিবাস হলে আশ্রমটি পরিচালনা করলে ভালো হতো। আশ্রমটির অন্যতম উদ্যোক্তা হাফেজ তাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের করোনাকালীন রাস্তার অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণের সময় তারা দেখতে পান অনেক বয়োবৃদ্ধ মানুষ, যারা আংশিক সুস্থ হলেও মানসিক ভারসাম্যহীন, ঠিকানাহীন ও একেবারেই নিঃস্ব। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফুটপাতে রাত কাটানো, অনিশ্চিত খাবার। এ করুণ দৃশ্য দেখে সিদ্ধান্ত নেন, এই অসহায় বৃদ্ধদের জন্য গড়ে তুলতে হবে একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। অসহায় বাবা-মায়েদের ভালোবাসার আশ্রয়স্থল ‘আদর্শ নিবাস বৃদ্ধাশ্রম’ যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে চারজন নিয়ে শুরু করা হয়। এ উদ্যোগে শুধু মাদরাসার শিক্ষার্থীরাই নয়। কলেজ এবং বিভিন্ন পেশার মানবিক মানুষ মিলিয়ে ২৭ জন সদস্য হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। নিজেদের সীমিত উপার্জন থেকে সঞ্চয় করে তারা বৃদ্ধদের জন্য খাবার, পোশাক, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। তারা হারিয়ে যাওয়া বৃদ্ধদের নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। যেসব অজ্ঞাতনামা বৃদ্ধ শেষ পর্যন্ত আশ্রমে কিংবা আশ্রমের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তাদের সম্মানজনকভাবে সরকারিভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী যে কাজটি করেছে, এটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
শিরোনাম
- ইউআইইউতে আন্দোলন: একযোগে উপাচার্যসহ ১২ শিক্ষকের পদত্যাগ
- সারাদেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আজ
- রিয়ালকে হারিয়ে কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
- অতিরিক্ত সময়ে গড়াল কোপা দেল রে’র ফাইনাল
- সীমান্তে যুদ্ধের আশঙ্কা, প্রস্তুতি নিচ্ছেন কাশ্মীরের গ্রামবাসীরা
- পাকিস্তানের কাশ্মীরে হঠাৎ বন্যা, ভারতের বিরুদ্ধে পানি ছাড়ার অভিযোগ
- চট্টগ্রামে একই রাতে দুই জায়গায় ডাকাতি, গুলিতে আহত ৫
- বাউবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিল তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরাও
- ২২ বছর পর চুরির টাকা ফেরত দিল আখাউড়ার যুবক
- দক্ষিণ এশিয়া মহাসংকটে
- খেলাফত আন্দোলনের আমির হলেন মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী
- নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে উৎকণ্ঠা
- মেঘলায় অবৈধ কাঠ পাচার রুখল র্যাব ও বন বিভাগ
- রিয়াল ভক্তের নাক ফাটিয়ে বার্সা সমর্থক গ্রেফতার
- এমন পাতলা আইফোন আগে দেখেননি!
- ফের নিষেধাজ্ঞার মুখে হৃদয়
- এক ক্লিকে তৈরি হলো স্টারবাকস কফিশপ!
- পাকিস্তানি শিল্পীদের চিরতরে নিষিদ্ধ করতে চাইছে ভারত?
- গান চুরি: এ আর রহমানকে ২ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ
- রায়পুরায় টেঁটা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চরাঞ্চলের মানুষ
শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা বৃদ্ধাশ্রম
‘আদর্শ নিবাস বৃদ্ধাশ্রম’ প্রথমে চারজন নিয়ে শুরু করা হয়। এ উদ্যোগে শুধু মাদরাসার শিক্ষার্থীরাই নয়, কলেজ এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ মিলে ২৭ জন সদস্য হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন...
সাইদ মেমন, বরিশাল
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর