বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন, পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ প্রতিনিয়তই পরিবর্তন হয়। ইসরায়েল আর ইরানের যুদ্ধটা আমাদের জন্য একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। যুদ্ধের ফলে তেলের দাম বাড়লে তা সবার উপর প্রভাব পড়বে। পোশাক শিল্প এর প্রভাব থেকে বাদ যাবে না।
সোমবার রাজধানীর উত্তরাস্থ বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের নুরুল কাদের অডিটোরিয়ামে বিজিএমইএ-এর ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নব-নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু’র হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
এ সময় বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, ফারুক হাসান, ড. রুবানা হক, এস এম ফজলুল হক, কাজী মনিরুজ্জামান, আনিসুর রহমান সিনহা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মাহমুদ হাসান খান বলেন, পোশাক শিল্প প্রতিনিয়ত নানা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপ, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, উচ্চ ব্যাংক সুদ, মুদ্রাস্ফীতি, মজুরি বৃদ্ধি ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির চাপে আমরা অনেকটা নিষ্পেষিত অবস্থায় আছি। এই অবস্থায় প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আমাদেরকে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের সকলের সহযোগিতায় এই কাজগুলো করতে আমরা সক্ষম হবো।
বিজিএমইএ নব-নির্বাচিত সভাপতি বলেন, নির্বাচনের সময় আমরা অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। পোশাক শিল্পের জন্যে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠন করার জন্য কাজ করা। এসএমই ও নন বন্ডেন্ড পোশাক কারখানাকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া। কাস্টমস ও ভ্যাট নিয়ে কাজ করবো। এলডিসি উত্তরণের প্রভাব নিয়ে আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবো, যেন সঠিক সময়ে এলডিসি উত্তরণ ঘটে। মার্কিন শুল্ক নিয়ে কাজ চলছে। এটি যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, পারস্পরিক শুল্ক যেন আমাদের ওপর আরোপ না হয় সেটি নিয়ে কাজ করবো। এক্সিট পলিসি নিয়ে কাজ করবো, আমরা প্রকৃত এক্সিট পলিসি তৈরি করতে চাই। এর বাইরেও আমাদের অনেকগুলো প্রতিশ্রতি রয়েছে।
বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, দল মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করতে পেরেছি। এ সময় আমরা শিল্পে শৃঙ্খলা নিয়ে এসেছি। বন্ডেড ওয়ার হাউস, সার্কুলার ইকোনমি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে ডিজিটাল প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবীদের পরিবারের জন্য কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজিএমইএ ডিজিটালাইজেশন করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আপনারা পণ্য রপ্তানি করেন না। আপনারা জাতির স্বপ্ন রপ্তানি করেন। আমি এখানে এসেছিলাম একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে, আর এখন দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আমি ফিরছি আপনাদের সহযাত্রী হিসেবে।
সভা শেষে সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান এবং সেক্রেটারি, চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আবুল কালাম বিজিএমইএ এর নতুন পরিচালনা পর্ষদকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে রোমো গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন (সিআইপি) নতুন পর্ষদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান এবং নন-বন্ডেড এসএমইএদের পক্ষ থেকে আরএল অ্যাপারেল লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান নতুন পর্ষদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত